৩০ অক্টোবর ২০২৫

মাছ তাজা দেখাতে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত রং

ইয়াসির রাফা »

বিভিন্ন খাবার টাটকা দেখাতে মেশানো হচ্ছে কৃত্রিম রং। এমন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়শই দেখা যায়। এবার প্রকাশ্যে মাছে রং দিতে দেখা গেল নগরীর হালিশহর ফইল্লাতলী বাজারে। রং আর ফরমালিনের ব্যবহার করায় এসব মাছ হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক রকমের ক্ষতির কারণ।

পচা-গলা মাছে রঙ মিশিয়ে এমন রুপ দেয়া হচ্ছে দেখে মনে হবে তাজা মাছ। ক্রেতারাও তাই পড়ে যান গোলকধাধায়। তারা দিব্যি হাসিমুখে বাড়ি নিয়ে যান বিষাক্ত ‘তাজা’ মাছ। বিক্রেতারা সাধারণত রুই, কাতলা, বোয়াল মাছকেই বেছে নেন। কারণ আঠাল আর কান লালচে থাকলে তাজা মাছ ভেবে কেনেন ক্রেতারা। ক্রেতার মনোভাব বুঝেই এ পদ্ধতিতে রং মেশান বিক্রেতারা। এর সঙ্গে যোগ করে দেন ফরমালিন।

প্রথমে একটি বালটিতে রং গুলানো হয়, তারপর সেখানে মাছ ডুবিয়ে তুলে রাখছিলেন মাছ বিক্রেতা। প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দোকান থেকে তিনি এই রং কিনে এনেছেন। রং’র কারনে মাছ তাজা দেখায় এতে মাছ বিক্রি করে লাভও বেশি করা যায়।

মাছে রং দেওয়া আইনত অপরাধ, তা জানা সত্ত্বেও এমন কাজ কেন করা হয়? জাবাবে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন, মাছে রং দিলে তা আকর্ষণীয় আর তাজা দেখায় এবং এর সাথে সাথে পচনও রোধ হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফ বলেন, শুধু মাছে নয় সবজি ,আনাজেও রং দেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন এটি শুধু এখানের চিত্র নয়, লোকচক্ষুর আড়ালে এরকম রং সহ নানা ক্ষতিকর বিষাক্ত ক্যামিকেল আরো অনেক জায়গায় ব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। নজরদারি না থাকার কারণে এই ব্যবসায়ীদের এতো সাহস।

ফইল্লাতলী বাজারে বাজারে মাছ কিনতে আসা জামিল হোসেন বলেন, ‘ফইল্লাতলী বাজারে অন্য জায়গার থেকে মাছের দাম বেশি, কারণ তাজা মাছ পাওয়া যায়। বেশি দামেই তাজা মাছ এখান থেকে কিনতাম। কিন্ত যা দেখলাম, এখন ভাবছি কী-ই-না খাচ্ছি আমরা।’

খাবারে কৃত্রিম রং’য়ের ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক জানতে বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রাকৃতিক রং ছাড়া বাকি সব রং স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। খাবারের রং সম্পূর্ন বিষাক্ত রাসায়নিক একটা পদার্থ। ফলে যখন এই রাসায়নিক পদার্থ আমাদের দেহে প্রবেশ করে। তখন তা আমাদের দেহে সুস্থ কোষ গুলোকে ধংস করে দিয়ে ক্যানসার তৈরি করে। এছাড়া গর্ভবতী মা যদি এইসমস্ত রং দেয়া খাবার খান তাহলে তার গর্ভস্থ সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম লাভ করা স্বাভাবিক। এছাড়া দীর্ঘ দিন রং দেয়া খাবার গ্রহণের ফলে কিডনির বিভন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় এমনকি কিডনি সম্পূর্ণ অকেজোও হয়ে যেতে পারে।

‘খাবারে রং ব্যাবহারের ফলে খাবারের যে প্রাকৃতিক রং থাকে তা নষ্ট করার সাথে সাথে খাবারের পুষ্টি গুনাগুনও নষ্ট করে ফেলে। তাই এসমস্ত পুষ্টিহীন, মারাত্মক শারীরিক সমস্যা সৃষ্টিকারী রং মেশানো খাবার থেকে বাঁচতে রাসায়নিক রং দেয়া খাবার থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে।’

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/ইরা

আরও পড়ুন