মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
রেন্ডম ডোপ টেস্ট হচ্ছে সিএমপি’তে। মাদক সেবনের প্রশাসনিক অপরাধে চাকুরিচ্যুতির পর ৪০ পুলিশ সদস্য কারাগারে। রাস্তায় যানজট কমাতে গণপরিবহন প্রফিট শেয়ারিংয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে সিএমপি’র পক্ষ থেকে। নগরীর ট্রাফিক সিস্টেম, বঙ্গবন্ধু টানেলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে টানেলের উভয় পার্শ্বে দুটি থানাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ অনিশ্চয়তায়। এসব কথা জানালেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির।
স্যোসাল মিডিয়ায় তুলে ধরা বিভিন্ন ঘটনার বিষয়গুলোকে সিএমপি কমিশনার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। অপরাধ হঠাৎ হতেই পারে ও আইনের প্রতি মানুষের অনাস্থা আসতেই পারে সেগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কভিডের সময় জনগণকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ ছিল সচেষ্ট। নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বিত বৈঠক হয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে। যা আগামীতে সুফল পাওয়া যাবে এমনটিই জানালেন বিদায়ী পুলিশ কমিশনার।
তিনি আরও বলেন, গত সোয়া এক বছরের মধ্যে গণপরিবহন নিয়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কোন কাজ করতে পারেনি কভিডের কারণে। কিন্তু সিএনজি টেক্সিকে একটি এ্যাপসের আওতায় আনা হয়েছে সঠিক পরিসংখ্যানের মাধ্যমে। আগামীতে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলবে সিএনজি ট্যাক্সি ও বাস। কারণ ক্রমান্বয়ে বাসকেও জরিপের মাধ্যমে এ্যাপসের আওতায় আনবে সিএমপি।
এদিকে, নগরীতে পাবলিক পরিবহন মালিকরা যদি প্রফিট শেয়ারিং পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম কমে যাবে। সিট ক্যাপাসিটি অনুযায়ী প্রফিট শেয়ারিং করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে পরিবহন মালিক সমিতিকে।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির বলেন, যেকোন টানেল নির্মাণে একটি স্ট্রাকচার থাকে। যা পদ্মা সেতু নির্মাণেও ছিল। এ সেতু যদিও সেনাবাহিনী পরিচালনা করছে কিন্তু সেতুর উভয় পার্শ্বে দুটি থানা করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে। একইভাবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও আনোয়ারায় নির্মাণের শেষের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু টানেলের উভয় পার্শ্বে দুটি থানা নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে পুলিশ হেডকোয়াটার্সসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ট্রাফিক ব্যবস্থা স্মুথ করতে এধরনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। কারণ নিরাপত্তা প্রদান করবে থানা পুলিশ আর চট্টগ্রামে টানেলের পরিচালনা করবে নৌবাহিনী এমনটিই জানালেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির।
সিএমপিতে জনবল বাড়ানো প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, সিএমপিতে আরও চারটি থানা বাড়িয়ে ২০টিতে পরিণত করার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে হেডকোয়াটার্সে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কারনে ট্রাফিক সিস্টেমের উপর চাপ পড়েছে লাখ লাখ গাড়ি চলাচল করছে চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে। এছাড়াও জঙ্গীবাদ বন্ধে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে আরো শক্তিশালী করতে হবে জনবল বাড়ানোর মধ্য দিয়ে। টানেলকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্ক গড়ে তোলা হলে পুলিশের জনবল বাড়াতে সরকার ক্রমান্বয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির সাংবাদিকদের আরও বলেন, চট্টগ্রামের স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের অন্য মেট্টোপলিটন বা জেলায় বদলী প্রসঙ্গে বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশের পরামর্শ দেন সাংবাদিকদের। কারণ জেলা কেন্দ্রীক দীর্ঘদিন চাকরী করা ও হঠাৎ করে আকস্মিক বদলী প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা থেকে আসা অনেক কর্মকর্তা এখন সিএমপিতে কাজ করছেন। তবে গত বছর সিএমপি কমিশনারের এক আদেশে ২১ জনকে বদলী করা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। এরম ধ্যে ৫ জন প্রমোশন পেয়ে বদলী হয়েছেন। একসঙ্গে এতো জনের বদলী হওয়ায় নতুন অফিসারদের সঙ্গে টিমওয়ার্ক করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যা আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে বলে জানালেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির।
ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আর্টিক্যাল ও প্রিন্টিং ম্যাটেরিয়াল সরবরাহের প্রস্ততি নিয়ে তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্টন সম্ভব হয়নি। ফুটপাত মানুষের জন্য উন্মুুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নিলেও তা শেষ করতে পারেননি সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির পুলিশের অপরাধ সম্পর্কে বলেন, মাদকাসক্ত হওয়ায় ৪০ জন পুলিশ সদস্যকে জেলে পাঠানো হয়েছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে এদের সনাক্ত করার পর এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। যদিও ৭ হাজার পুলিশ সদস্যের মধ্যে এই সংখ্যা খুবই নগণ্য। তবুও রেন্ডম ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে সিএমপি’তে।
দীর্ঘ প্রায় দু’বছর কর্মরত থাকার পর তিনি সিএমপি থেকে ঢাকা হেডকোয়ার্টাসে যোগ দিচ্ছেন। সদ্য বিদায়ী কমিশনার নতুন কমিশনারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে শুক্রবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রাম ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে সিএমপি’র সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এ বিদায়ী কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, গত দু’বছরে তিনি অপরাধ দমনসহ নানা কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নগরবাসির সুবিধায় বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছেন।













