৩০ অক্টোবর ২০২৫

‘মানুষ মানুষের জন্য’ এ উক্তি ছৈয়দ’র কাছে যেন বেদনারই শ্লোক!

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

মাত্র পাঁচ লাখ টাকা হলে হয়তো চিকিৎসা মিলতো ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু আশরাফুল জন্নাত নুসরাতের। কিন্তু কারো কাছে সহযোগিতা না পেয়ে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় চোখের সামনেই প্রিয় মেয়ে মৃত্যু অবলোকন করেছে নুসরাতের অসহায় বাবা-মা। তাই মসজিদের সহকারি ইমাম পিতার কাছে ‘মানুষ মানুষের জন্য’ কালজয়ী এ উক্তি যেন বেদনারই শ্লোক।

চিকিৎসায় নিজেদের সম্বল শেষ করে, জানাশোনা অনেকের কাছে সহযোগিতা চেয়েও ব্যর্থ পিতা নিরবে মেধাবী শিক্ষার্থী নুসরাতকে মৃত্যুর কাছে সফে দিয়েছেন। রোববার সকালে কক্সবাজারের চকরিয়ার শাহারবিল নিজ বাড়িতেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে নুসরাত। একইদিন মাগরিবের পর মাওলানা আবুল হোসাইনের ইমামতিতে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

আশরাফুল জন্নাত নুসরাত (১০) চকরিয়া উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম নয়াপাড়ার মাওলানা ছৈয়দ আলমের মেয়ে ও ২০২০ শিক্ষাবর্ষে স্থানীয় শাহারবিল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের চর্তুথ শ্রেণীতে উঠেছিল। ছৈয়দ আলম চট্টগ্রামের বায়োজিদ বোস্তামী শেরশাহ এলাকার বাইতুল মোকাররম শাহী জামে মসজিদের সহকারী ইমাম। মা উম্মে কাউসার  গৃহিণী।

নুসরাতের বাবা ছৈয়দ আলম বলেন, ২০ মাস আগে শিশু নুসরাতের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেই থেকে পরিবারের যা ছিল তা দিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। একপর্যায়ে চিকিৎসা খরচ চালাতে গিয়ে আমরা আর্থিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হই।

তিনি বলেন, অবস্থা সংকটাপন্ন হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুব দ্রুত ভারতে নিয়ে যেতে পরার্মশ দেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা করতে প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। যা আমি বহন করতে অক্ষম ছিলাম।

তিনি আরো বলেন, অভাব অনটনে সংসার হলেও আমরা কখনো কাউকে কিছু বলতাম না। কিন্তু মেয়েকে বাঁচাতে জানাশোনা বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কেউ নূন্যতম সহযোগিতার হাতও বাড়াননি। শতচেষ্টা করেও ফুটফুটে মেয়েটিকে বাঁচাতে পারিনি। সমাজের বিত্তবান অনেকে অপ্রয়োজনেও অকাতরে বিপুল টাকা খরচ করে। তাই এখন মনে হচ্ছে ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’ এ উক্তিটি ‘ভাগ্যবান’ কোন মানুষের জন্য প্রযোজ্য। সবকিছুর পরও আল্লাহর সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। 

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন