আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান »
দুই বছর পর করোনার ধাক্কায় সামলিয়ে আবারও পাহাড়ে গানের সুরে বেজে উঠেছে ‘সাংগ্রাইমা ঞিঞি ঞাঞা রিকেজে পাইমেহ.’ অর্থাৎ সাংগ্রাই আসছে একসাথে মিলেমিশে জলকেলি উৎসবে মেঠে উঠি। এই মধুর রত্নের গানের সুরের পাহাড়ের আনাচে কানাচে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মারমা সম্প্রদায়ে সামাজিক উৎসবটি ছড়িয়ে পড়েছে।
উৎসবের আনন্দমুহূর্তকে ভাগাভাগী করতে ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে নিজেদের সংস্কৃতির পোশাকে পরিধানে জড়ো হতে থাকেন বৌদ্ধধর্মালম্বীরা । সেইসাথে বিভিন্ন প্লেকার্ড, পেস্টুন, ব্যানার নিয়ে সমাবেত হয় পাহাড়ে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে শহরে রাজা মাঠে আকাশের বেলুন উড়িয়ে মাহা. সাংগ্রাই পোয়ে. বা বর্ষবরণ শুভ উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

উদ্বোধন শেষে নিজেদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি পোশাক পরিধানে অনুষ্ঠানের সারিবদ্ধভাবে হাতে ফেস্টুন, প্লেকার্ড ও পাহাড়ি গানের সুরে তাল মিলিয়ে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটে এসে সমাবেত হয়।
এসময় জেলায় বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের জাতিগোষ্ঠী অংশ নেন। পরে ‘হিংসা বিদ্বেষ দূরে থাক শান্ত সবুজ গিরি ছায়ায়, সকল কালিমা মুছে যাক মৈত্রীময় জলধারায়’ স্লোগানে শুরু হয় বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা। সে পূজায় বয়োজ্যেষ্ঠদের মাঝে মোমবাতি, আগরবাতি, দেশলাই, ফলমূলসহ দান করেন আয়োজকরা।

আয়োজকরা জানান, মহামারি করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায় আবারো পাহাড়ে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বান্দরবান সাংগ্রাই উৎসব (পোয়ে.)। প্রথম দিনটিতে বৌদ্ধ বিহারের ছোয়াই. প্রদান (আহার), বুদ্ধমুর্তি স্নান, ধর্মদেশনাসহ ইত্যাদি। দ্বিতীয় দিনে সাঙ্গু নদী বালু চড়ে সাংগ্রাই পানি মৈত্রীবর্ষণ (জলকেলি), পাহাড়িদের ঐহিত্য খেলাধুলা ও তৃতীয় দিনের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় শুরু হবে পিঠা তৈরি উৎসব।