১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

মারা গেলো ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের ‘নদী’ 

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার»

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের আবদ্ধ সিংহী নদী অবশেষে মারা গেছে। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে চিকিৎসা চলমান অবস্থায় নদী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। দীর্ঘ দু’মাস গুরুত্বর অসুস্থ থাকাকালে একাধিক বার বিশেষজ্ঞ টিম নিয়ে বোর্ড বসিয়েও সুস্থতার দিকে তাকে ফেরানো যায়নি। তার মৃত্যুর বিষয়টি চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে (নং-৯৩০/২২-৪-২০২২)। এমনটি জানিয়েছেন পার্কের তত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম।

তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে রক্ষিত আবদ্ধ সিংহী (নদী নামে পরিচিত) গত ২ ফেব্রুয়ারি বেষ্টনী সঙ্গী পুরুষ সিংহ (সম্রাট)’র সাথে মারামারি করে এবং পুরুষ সিংহ বেশি আঘাত পায়। প্রাণিসম্পদ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসায় উভয় সিংহ সুস্থ হয়ে উঠে। কিন্তু এরইমধ্যে ১৯ ফেব্রুয়ারি শারীরিক মিলনে গিয়ে সম্রাট-নদী আবারো মারামারিতে জড়িয়ে উভয়ে জখম প্রাপ্ত হয়। এতে সিংহী (নদী) গলার নিচে জখম হয়। উভয় সিংহকে ভেটেরিনারী ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের পরামর্শ মতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সম্রাট সুস্থ হয়ে উঠলে ও নদীর গলার নিচের জখম হতে পানি ঝরছিল। তা সারাতে ২২ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি পার্কের বর্তমান ভেটেরিনারী অফিসার ডা. হাতেম সাজ্জাত জুলকার নাইন চিকিৎসা দেন।

তত্ত্বাবধায়ক আরো জানান, এরপরও সিংহীর গলার নিচ থেকে পানি ঝরা বন্ধ না হওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি ও এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, চকরিয়া উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা এবং পার্কের ভেটেরিনার অফিসারসহ ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে অসুস্থ নদীকে (সিংহীটিকে) চিকিৎসা সেবা দেয়। দিন দিন খাদ্য গ্রহণ কম করতে থাকে এবং মুখ থেকে লালা ঝরা কমেনি নদীর। ২৭ মার্চ হতে একেবারে খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দিয়ে সিংহীটি সব সময় জিহবা বের করে রাখত এবং লালা ঝরার পরিমানও বেড়ে যায়। তখন আবারও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, চকরিয়া উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা এবং পার্কের ভেটেরিনারী অফিসারসহ ৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড দ্বারা সিংহীটিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যহত রাখা হয়।

পার্কের ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম বলেন, রোগের কোন উন্নতি না হয়ে সিংহীটি আরো দুর্বল হয়ে পড়ায় বোর্ডের পুরোনো সিদ্ধান্ত মতে চিকিৎসা অব্যহত রাখা হয়। গত ২৮ মার্চ সিংহীর রক্ত ও ক্ষতস্থানের নমুনা পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী এন্ড সাইন্সসেস বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। গত ১২ এপ্রিল পাওয়া টেষ্ট রিপোর্টের ফলাফলে মেডিকেল বোর্ড উল্লেখ করে সিংহীটির ক্ষতস্থান থেকে শরীরে (viral infection (feline immunodeficiency virus / Feline leukemia virus) ক্ষতিকর ভাই ছড়িয়েছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ ভেটেরিনারী বিশেষজ্ঞ টিমকে প্রয়োজনীয় সকল সাপোর্ট প্রদান সত্বেও সিংহীটির শারিরীক উন্নতি না হয়ে সিংহী (নদী)’র মৃত্যু সবাইকে ভারাক্রান্ত করেছে বলে উল্লেখ করেন পার্ক তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ