সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশে দালাল চক্রের আস্তানায় জড়ো করা ৫৮ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকার আস্তানা থেকে উদ্ধারদের মাঝে ৯ পুরুষ, ১৬ নারী ও ৩৩ শিশুসহ ৫৭ জন রোহিঙ্গা এবং একজন বাংলাদেশি।
অভিযানে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মানব পাচার চক্রের ইয়াছিন বাহিনীর প্রধান মো. ইয়াছিনসহ (২৩) ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা পাহাড়ি এলাকার পাশে মানবপাচার চক্রের আস্তানা এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওসমান গনি।
গ্রেফতার ইয়াছিনের অপর তিন সঙ্গী হলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দরগারছড়া জলু সওদাগরের ছেলে মো. জুবায়ের (৩৫) একই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর লম্বরীর বাদশা মিয়ার ছেলে নাজির হোছন (৬১) ও নোয়াখালী বেগমগঞ্জের ৯নং ওয়ার্ডের তাজুল ইসলামের ছেলে রামিমুল ইসলাম রাদীদ (৩১)।
ওসি বলেন, মানবপাচার চক্র উখিয়া- টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক থেকে প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রোহিঙ্গাদের তাদের আস্তানায় নিয়ে এসে মজুদ করছে।
এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম শুক্রবার রাত ৮টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা পাহাড়ি এলাকার একটি আস্তানায় অভিযান চালায়। এসময় আস্তানা হতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৫৭ জন রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশী মিলে ৫৮ জনকে উদ্ধার করা হয়।
এ সময় মানব পাচারে জড়িত দালাল চক্রে মুল হুতা সদর ইউনিয়নের মানব পাচারের ইয়াসিন বাহিনীর প্রধানসহ ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি আরও বলেন, মানবপাচার দালালরা এসব ভিকটিমদের আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবন-যাপন ও অধিক বেতনে চাকুরী ও অবিবাহিত নারীদেরকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার আশ্রয়ে নিয়ে যৌন নিপীড়ন, প্রতারণামূলক বিবাহ ও জবরদস্তিমূলক শ্রমসেবায় লিপ্ত করায়। এমন উদ্দেশ্য দালাল চক্র তাদের আস্তানায় ৪-৫ দিন আটক রাখেন। পরবর্তীতে পাচারকারীরা বিভিন্ন সিন্ডিকেটের যোগসাজশে মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনিশিয়া ভিকটিমদের কাছে পাচার করেন।
উদ্ধার ভিকটিম উখিয়ার থাইংখালি ক্যাম্প-১৩ সৈয়দ বলেন, মানব পাচারকারি দালালদের প্রলোভনে পড়ে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ক্যাম্প থেকে বের করা হয়। পরে সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকায় দালালদের বসত ঘরে রাখেন। পাহাড়ি এলাকার লাগোয়া বসতঘরে গত এক সপ্তাহ ধরে আমাদের আটক রাখা হয়। দালাল চক্র আমাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ওসি ওসমান বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার ভিকটিমদের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওসি।












