২৮ অক্টোবর ২০২৫

মাস্ক পড়াকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে- সুজন

বাংলাধারা ডেস্ক

মাস্ক পড়াকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

 রবিবার (২৭ জুন ) সকাল ১১টায় দ্বিতীয় দিনের মতো নগরীর করোনা পরিস্থিতি জানতে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের কোভিড চিকিৎসা পরিদর্শন এবং কোভিড স্কোয়াডের সাথে মতবিনিময় করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশে দিনের পর দিন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রতিদিনই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। করোনা চিকিৎসা থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছেন। লকডাউন, বিধিনিষেধসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনার মধ্য দিয়ে জনগনকে ঘরে রেখে করোনা সংক্রমণ কমাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। বারবার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলেও জনগন মাস্ক পড়া কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন। অথচ শুধুমাত্র মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে পারলে আমরা করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারি। তাই মাস্ক পড়াকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে এতে করে চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে রোগীর স্থান সংকুলান নিয়ে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ‘

করোনা সংক্রমণকে যারা এখনো গুরুত্ব দিচ্ছে না তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে সুজন বলেন, ‘গতবছর আমরা করোনার ভয়াবহ রূপ দেখেছি। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সারা নগরজুড়ে যে নৈরাজ্য চলছিল তার বিপরীতে করোনা রোগীদের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন মা ও শিশু হাসপাতাল। এ পর্যন্ত করোনার করাল থাবায় এই হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তারপরও আমাদের চিকিৎসকরা হাল ছাড়ার পাত্র নন। আমাদেরকেও তাই চিকিৎসকদের মর্ম উপলব্ধি করে সচেতন হতে হবে।’

তিনি করোনা আক্রান্ত রোগীদের সিট ভাড়া, পরীক্ষা এবং ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর কড়াকড়ির কোন বিকল্প নেই। তবে সারাদেশে একসাথে লকডাউন না দিয়ে যে সকল এলাকায় সংক্রমণের মাত্রা ১৫ শতাংশের উর্দ্ধে সে সকল এলাকায় কঠোর লকডাউন দিয়ে কম সংক্রমণকৃত এলাকাগুলোতে মাস্ক পরিধান করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা তা বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের জীবন ও জীবিকাকে সমুন্নত রেখে যেভাবে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন সেভাবে যদি বর্তমান লকডাউনের ঘোষণাকে পুনর্বিবেচনা করা হয় তাহলে জীবন ও জীবিকা দুইটাই সমুন্নত থাকবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।’

এছাড়া লকডাউনকৃত এলাকায় গরীব, দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাদ্য সহায়তার মাধ্যমে যাতে কোন প্রকার মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ারও আহবান জানান তিনি।

তিনি মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে যারা মাস্ক পরিধান করবেন না তাদের এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক সপ্তাহ কোভিড হাসপাতালে স্বেচ্ছাশ্রমের আইন পাশ করার অনুরোধ জানান। নগরীর বিভিন্ন সামর্থ্যবান ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে মা ও শিশু হাসপাতালসহ করোনা মহামারীতে যে সকল সংস্থা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদেরকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করার আহবান জানান সুজন। মতবিনিময় শেষে মা ও শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে যে সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় মারা গিয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

বাংলাধারা/এফএস/এসজে

আরও পড়ুন