২ নভেম্বর ২০২৫

মিরসরাইয়ে পুকুরে সেচ দেওয়া নিয়ে হামলা, আহত ১৫

মিরসরাইয়ে

পুকুরে সেচ দেওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পশ্চিম মিঠানালা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবাসী মোশাররফ হোসেন গংদের পুকুর সেচে বাঁধা দেয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এসএম আবু তাহের ভূঁইয়া। এতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ হামলায় জড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

হামলায় আহতদের মধ্যে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আবু তাহের ভূঁইয়া (৬৫), স্ত্রী লায়লা বেগম (৫০), তার বড় ছেলে মাসুদ পারভেজ (৩৭), ছোট ছেলে নিয়াজ মোর্শেদ (৩৫), নুর উদ্দিন (২৮), ফিরোজা বেগম (৩৪)।

অপরপক্ষে জাহাঙ্গীর আলম (৫০), মনিরুল ইসলাম (৪৫), ফোরকান (২৮), লায়লা আঞ্জুমান (৪২), শরিফুল ইসলাম আবিরের (২৫) নাম জানা গেছে।

আহতদের অধিকাংশকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া আবু তাহের তার স্ত্রী ও দুই ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, হামলায় জড়িত সন্দেহে শরিফুল ইসলাম আবির নামের একজনকে মস্তাননগর হাসপাতালের সামনে থেকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়।

প্রসঙ্গত, এস এম আবু তাহের ভূঁইয়া ১০ নম্বর মিঠানালা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

ভুক্তভোগী এহসানুল হক আসাদ অভিযোগ করে বলেন, ‘পুকুরের মধ্যে এস এম আবু তাহের ভূঁইয়ার কোনো মালিকানা নেই। তবুও মালিকানা দাবি করে সেচ দিতে বাধা দেন। চেয়ারম্যান থাকা অবস্থা থেকে তিনি এলাকায় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছেন। আমার চাচা প্রবাসী মোশাররফ হোসেন ঘর করার জন্য দেশে আসেন। ভিটের মাটির জন্য পুকুর সেচ দেওয়ার কথা বারবার জানালেও তিনি বৈঠকের সময় জানান না। আমরা স্যালো মেশিন বসালে তিনি তার দলবল নিয়ে বাধা দেন। আমাদের ওপর হামলা চালান। আমার মায়ের অবস্থা আশংকাজনক।

সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আবু তাহের ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের পুরাতন বাড়ির পুকুর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিপক্ষ মোশাররফ হোসেন, আবুল হোসেন গংদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। ২০২২ সালে লায়লা আঞ্জুমান বাদি হয়ে আমাকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে অসংখ্য সালিশ হয়েছে। তারা তাদের দাবির সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। আজ (রোববার) সকালে কাউকে না জানিয়ে পুকুরে সেচ দেওয়ার জন্য স্যালো মেশিন বসায় শরীফুল ইসলাম আবির। পুকুর সেচ দেওয়ার বিষয়টি আগে থেকে না জানানোয় আমি আমার ছেলে নিয়াজ মোর্শেদকে পাঠিয়ে মেশিন বন্ধ করতে বলি। এর কিছুক্ষণ পর দুপুর দেড়টার দিকে আমি মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য যাওয়ার সময় শরীফুল ইসলাম আবির, লায়লা আঞ্জুমান, সিরাজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম, আবুল হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম সহ ১২-১৩জন সন্ত্রাসী দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। এসময় আমাকে বাঁচাতে আমার ছেলে-স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও হামলা করে। হামলায় আমি, আমার স্ত্রী লায়লাসহ পরিবারের একাধিক সদস্য আহত হয়।’

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জায়গা সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে হামলায় সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আবু তাহের ভূঁইয়াসহ উভয়পক্ষের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের কয়েকজন চমেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হামলায় জড়িত সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ