১১ ডিসেম্বর ২০২৫

মিরসরাইয়ে বিএনপির কর্মীদের হামলায় জুলাই যোদ্ধা নিহত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় গাজী তাহমিদ খান (২৫) নামে এক জুলাই–যোদ্ধা যুবক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত তাহমিদ বারইয়ারহাট পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের মো. আলমগীরের ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় হামলায় আহত হলে তাহমিদকে প্রথমে উদ্ধার করে বারইয়ারহাট মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে বারইয়ারহাট পৌর বাজারে একটি দোকানে পা তুলে বসেছিলেন হিঙ্গুলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুবায়ের। এসময় বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটনকে দেখে পা নামিয়ে না বসায় লিটন জুবায়েরকে লাথি মারেন। এরপর উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা সরে যান। পরে লিটন ও জুবায়ের নিজ নিজ এলাকা জামালপুর ও হিঙ্গুলী থেকে লোকজন নিয়ে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তাহমিদ, রায়হান, মোহন দে, আবির, মজাম্মেলসহ ৮–১০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোহন দে জানান, বুধবার বিকেলে লিটন ভাইয়ের সঙ্গে জুবায়েরের ঝামেলার বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমরা কয়েকজন মিলে ট্রাফিক মোড়ে যাই। সেখানে গিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে লিটন ভাইয়ের জামালপুর এলাকার লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাহমিদ কখন সেখানে গেছে বলতে পারি না। সে আমাদের এলাকার হওয়ায় তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। পরে রাত ১২টার দিকে চমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত তাহমিদের বাবা আলমগীর বলেন, “আমার একমাত্র ছেলেকে এভাবে মেরে ফেলল? ও তো কোনো দোষ করেনি। দোষ করলেও আমি বিচার করতাম, শেষ করে দিতে হতো? আমি এখন কীভাবে বাঁচব? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।”

এ বিষয়ে বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটন বলেন, ঘটনার আগে এলাকায় সামান্য ছেলেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এসময় জুবায়েরের সঙ্গে আমার হাতাহাতি হয়। পরে তারা বারইয়ারহাট চলে যায়। সেখানে আমার সম্পৃক্ততা নেই। এরপর কী হয়েছে, তা আমার জানা নেই। অভ্যন্তরীণ পূর্বশত্রুতার জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক বলেন, জুনিয়র–সিনিয়র দ্বন্দ্বে বিএনপির একই গ্রুপের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাহমিদ নামে একজন নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। এই ঘটনায় থানায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি।

আরও পড়ুন