আগামী ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) সংসদীয় আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার আলোচনায় থাকা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ তনয় মাহবুব রহমান রুহেল নৌকা প্রতীক নিয়ে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ঈগল প্রতীক নিয়ে ইতোমধ্যেই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে প্রার্থীদের সমর্থনে ভোটের মাঠে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীদের স্বজনরাও। নৌকা প্রতীকের সমর্থনে মাঠে ভোট চাইতে নেমেছেন রুহেলের মা আয়েশা মোশাররফ। বৃদ্ধ শরীরে পায়ে হেঁটে প্রতিদিন তিনি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছেলে রুহেলের পক্ষে ভোট চাইছেন।

আয়েশা মোশাররফ বলেন, আমার স্বামী সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ আসন থেকে ৭ বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দীর্ঘ ৫৪ বছর মিরসরাইবাসীর জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। আগে স্বামীর জন্য ভোট চেয়েছি। এই প্রথম ছেলের জন্য ভোট চেয়ে আপনাদের দুয়ারে এসেছি। আমার ছেলে এমপি নির্বাচিত হলে তাঁর বাবার পদাংক অনুসরণ করে আপনাদের জন্য কাজ করে যাবেন। তাই আপনার আগামী ৭ জানুয়ারি আমার ছেলেকে নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার অনুরোধ করছি।
অপরদিকে ভোটের মাঠে প্রার্থীর স্বজনদের প্রচারণায় পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের (ঈগল) পরিবারও। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরুর পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের আপামর জনসাধারণের সাথে মিশছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের সহধর্মিনী তাহমিনা গিয়াস। বিশেষ করে মহিলাদের সাথে কুশল বিনিময় করে স্বামী গিয়াসের পক্ষে ভোট ও দোয়া চান তিনি। ইতোমধ্যে তাহমিনা গিয়াস বারইয়ারহাট পৌরসভা, হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী, মেহেদীনগর, জামালপুরসহ একাধিক ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন।

গণসংযোগে তাহমিনা গিয়াস বলেন, আমার স্বামী প্রায় ৫০ বছর আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। উপজেলা জুড়ে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমার স্বামী সব সময় মিরসরাইবাসীর সুখে দুঃখে ছিলেন। ভবিষ্যতে থাকবেন। আপনারা তাকে ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।
রুহেলের পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে ময়দানে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন বর্ষীয়ান নেতা, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ৭ বারের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বৃদ্ধ বয়সেও চষে বেড়াচ্ছেন মিরসরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন বর্তমান সরকারের আমলে বদলে যাওয়া এ জনপদের কথা। বলছেন উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকায় আস্থা রাখার কথাও। ইতোমধ্যেই তিনি বৃদ্ধ শরীরে ছেলের পক্ষে ভোট চাইতে বেশ কয়েটি উঠান বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

ছেলের পক্ষে ভোট চাইতে এসে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছি। বঙ্গবন্ধু আমোকে স্নেহ করতেন। এখন আমি তার কন্যা শেখ হাসিনার সাখে আছি। ৭ বার এমপি হয়েছি, এটা কিন্তু বিরল। সারা বাংলাদেশে ৭ বার এমপি হয়েছেন এমন কম আছেন। ৮ বার হতে পারতাম তবে এক বেঈমানের জন্য হতে পারি নি। যে কি-না এখন নির্বাচন করছেন। আমি যতটুকু হয়েছি তা আপনাদের স্নেহ ভালোবাসার কারণে হয়েছি।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আরও বলেন, এখন আপনাদের প্রতি আমার একটা অনুরোধ, আপনারা আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করবেন। সে আমার ছেলে বলে বলছিনা, নৌকার প্রশ্নে কোন আপস নেই। আপনারা নৌকাকে ভোট দিবেন। আর নৌকা জিতলে শেখ হাসিনা জিতবে।
ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের ঈগল প্রতীকে ভোট চাইতে সুদূর কানাডা থেকে ছুড়ে এসেছেন গিয়াস তনয়ও। মা তাহমিনা গিয়াসের সাথে বাবা গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে সমানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। ৫ নং ওসমানপুর ইউনিয়নসহ একাধিক ইউনিয়নে গণসংযোগও করেন তিনি। বাবা গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, আমার বাবা আপনাদেরই লোক। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন আপনাদের সুখে দুখে সবসময় পাশে ছিলো। আমি আশা করছি ৭ তারিখ সারাদিন আমার বাবাকে ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম -১ (মিরসরাই) সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী রুহেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন ছাড়াও জাতীয় পার্টিসহ মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। অন্য প্রার্থীরা সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গণসংযোগ চালালেও ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্ধিতায় আলোচনায় রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব রুহেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন।
				












