২৯ অক্টোবর ২০২৫

মিরসরাইয়ে করোনা প্রতিরোধে নেই জনসচেতনতা, করছে না নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত ,মিরসরাই »

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত মহামারি ভাইরাস করোনাকে নিয়ন্ত্রণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও তেমন একটা সচেতন নয় মিরসরাইয়ের সাধারণ মানুষ। অনেকটা স্বাভাবিকভাবে প্রাত্যহিক কাজগুলো সেরে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছেন তারা। মাস্কের ব্যবহারও তেমন একটা নেই। অনেকে মেতে উঠছেন খোশ গল্পে আর আড্ডা দিচ্ছেন যে যার মতো।

মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বেদে পাড়ায় দেখা গেছে এমন এক চিত্র। যেখানে সবাই মিলে দোকানে দিচ্ছেন আড্ডা, কেউ বা খেলছেন ক্যারাম। একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড চলছে বিয়ের উৎসব। জোরারগঞ্জ আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চলছে একের পর ফুটবল ম্যাচ। এছাড়া জোরারগঞ্জ বাজারের দোকানপাট গুলোতে নিত্য দিনের মতো চলছে বেচাকেনা। সচেতনার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। অনেকই আবার আতঙ্কিত হয়ে ১ সপ্তাহ কিংবা ১ মাসের খাবার মজুদ করতেও দেখা গিয়েছে। মুদি দোকানগুলোকে প্রচুর ভীড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।

উপজেলার আবু তোরাব বাজারে অনেক ব্যবসায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বাড়িয়ে দেন, যদিও পরে সেটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর মাস্টারের সহয়তায় স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসে।

আবার অনেককে দেখা গেছে, বেশ সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহার করছেন এবং ঘর থেকে বের হতেই সাথে রাখছেন জীবাণুনাশক হেক্সিসল। উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং মেয়রদের সভাপতি করে ইতোমধ্যে সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আবু তোরাব স্বাধীনতা মেলা এবং বারইয়ারহাট বাণিজ্য মেলা।

যারা বিদেশ থেকে এসেছে তাদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহয়তা করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তবে অনেকে প্রবাসী সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হোম কোয়ারান্টাইনের কথা বলা হলে ও অনেকে জানেন না হোম কোয়ারান্টাইন কি! গত ২ সপ্তাহে প্রায় ১৫ জন প্রবাসী এসেছেন যারা মিরসরাইয়ের বাসিন্দা। এদের কেউ নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন বরং খোশ মেজাজে আড্ডা দিচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ওয়াহেদ পুর ইউনিয়ন এক আমেরিকা প্রবাসীকে হোমকোয়ারান্টাইন না মানায় ১০ হাজার টাকা জরিমানাও গুণতে হয়। এছাড়া ইতালি থেকে এসেছেন একজন প্রবাসী, যাকে নিয়ে উৎকণ্ঠার কোনো শেষ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে কোচিং এবং প্রাইভেট ক্লাস। শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিচ্ছেন ইচ্ছে মতো। লেগুনা, সিএনজি এবং বাসগুলোতে একে অপরের সাথে বসছেন ঘেঁষাঘেঁষি করে। বেশিরভাগ যাত্রীর মুখে নেই মাস্ক।

বারইয়ারহাট পৌরসভার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন সাকিব জানান, আমি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এক প্রবাসীকে বারইয়ারহাট বাজারের বিভিন্ন দোকানে আড্ডা দিতে দেখেছি। দেশে করোনো আংক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হলেও মিরসরাই উপজেলায় এর কোনো প্রভাব নেই। অবাধ বিচরণে সবাই ব্যস্ত। অনেকের চলাফেরায় করোনা নিয়ে সচেতনার কোনো বৈশিষ্ট্য চোখে পড়েনি।

মিরসরাই পৌর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের বাজারে ক্রেতা সমাগম নিত্যদিনের মতো। মিরসরাই পৌরসভার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, করোনা প্রতিরোধে সবাইকে মাস্ক এবং হাত পরিষ্কারের জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, প্রবাসীদের অবশ্যই সরকারি নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুন