বাংলাধারা প্রতিবেদন»
স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের নিয়ে চলে নানা বিশ্লেষণ। এসব নির্বাচনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ যেমন হয়, তেমনি চলে মৌখিক বাকবিতণ্ডাও। এসব বিতর্ক, দলাদলি ছাপিয়ে নিজ গ্রামের মানুষকে একই সামিয়ানার নিচে নিয়ে এলেন রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের একজন মেম্বার পদপ্রার্থী। বিনয়-সততায় গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে এক সুরে, এক কাতারে নিয়ে এসে তিনি ইতোমধ্যেই নজর কেড়েছেন ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
সরফভাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মীরেরখীলের একজন ভোটার বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডের নির্বাচনী হালচাল পুরোপুরি ভিন্ন। ফুটবল প্রতীকে দিলদার ভাইয়ের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ধরনের মতানৈক্য ছাড়াই এলাকাবাসী দিলদার ভাইকে মেম্বার বানাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এই ওয়ার্ডের সিংহভাগ মানুষের মুখে তার প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন দেখলে অবাক হবেন।’
স্থানীয়রা জানান, ছোটবেলা থেকে মেম্বার পদপ্রার্থী দিলদার বড়দের সন্মান আর ছোটদের স্নেহ করে এলাকায় একটা সন্মানজনক অবস্থান তৈরি করেছেন। মানুষের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত তৈরি করতেই বিপদ-আপদে সামর্থ্য অনুযায়ী ছুটেছেন। করোনাকাল ছাড়াও নানা সময়ে সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ ও অর্থ সহায়তা দিয়ে পাশে ছিলেন এই এলাকার সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে এলাকার মুরুব্বিরা ভালো চোখে দেখেন দিলদারকে। তাই এবার নির্বাচনে দিলদার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। আমরা চাই, দিলদারের মতো একজন সৎ মানুষ জয়ী হোক। যার উপর এলাকার মানুষের আস্থা-বিশ্বাস আছে।’
এ বিষয়ে সরফভাটা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী মো. দিলদার হোসেন বলেন, ‘এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বিদের পরামর্শে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়েছি। এলাকার যুবসমাজেরও চাওয়া আমি প্রার্থী হই। আমার প্রতি এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার ইতিবাচক সাড়া দেখে এই সিদ্ধান্ত নিতে সাহস করেছি। গ্রামের উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে ও সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রার্থী হয়েছি। জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, এই এলাকার মানুষের সাথে আমার যে দীর্ঘদিনের আত্মার সম্পর্ক, তা অতীতের মতো সামনেও অটুট থাকবে বলে আশা রাখি।’
মেম্বার পদপ্রার্থী দিলদার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অভিভাবক, আধুনিক রাঙ্গুনিয়ার রূপকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধরাণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞ যে, তিনি সুষ্ঠুভাবে এই নির্বাচন পরিচালনার আশ্বাস দিয়েছেন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনের ৮ নম্বর সরফাটা ইউনিয়নে শেখ ফরিদ উদ্দীন চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান ঘোষিত হয়েছেন। তিনিও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন— নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এর পরও এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয়ভীতি কাজ করছে। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন মীরেরখীলবাসী একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপভোগ করতে পারেন এবং নির্ভয়ে ভোট দিয়ে এই ভোট উৎসব যেন পালন করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন— করোনাকালে গরিব ও হতদরিদ্রদের পাশে থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করে গেছি। এলাকা বিভিন্ন সমস্যা সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছি। ভবিষ্যতে এলাকার মানুষের পাশে থেকে সাহায্য-সহযোগিতা ও এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে চাই। এজন্য এলাকাবাসীর আরো ভালোবাসা ও দোয়া চাই।’
মীরেরখীল এলাকাকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার প্রতিজ্ঞা করে দিলদার হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর ভালোবাসায় নির্বাচিত হলে এই মীরেরখীলকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবো। এলাকার উন্নয়নগুলো ধারাবাহিকভাবে করে যাবো, ইনশাল্লাহ। প্রশাসনের প্রতি আবারও আহ্বান থাকবে, সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট নিয়ে যে ভয়ভীতি রয়েছে তা যেন দূর হয়, এবং ভোট কেন্দ্রে গিয়ে যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা যেন কঠোরভাবে নেয় হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কাঁদা ছোড়াছুড়িতে বিশ্বাসী নই। এই এলাকার মুরুব্বিদের কোলে-পিঠে করে বড় হয়েছি। রাগ বা হিংসার বশবর্তী হয়ে কাউকে কোনোদিন অসম্মান করিনি। সামর্থ্য অনুযায়ী সবার আবদার, আদেশ-উপদেশ মেনে চলার চেষ্টা করেছি। যে কটু কথা বলেছে, তাকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছি। কেউ নির্যাতিত হলে তার পাশে দাঁড়িয়েছি। ফলে এলাকার মানুষের সাথে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাই তারা আমাকে জয়ী করতে নিজ থেকেই সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করছে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং তাদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অভিভাবক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের কল্যাণে সরফভাটা তথা পুরো রাঙ্গুনিয়ায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। সেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিঃস্বার্থ সহযোগী হিসেবে কাজ করে যেতে চাই এই এলাকায়। ১ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি-বেসরকারি নানা বরাদ্দের সুষম বণ্টন ঘটাতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমি যে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবো গ্রামের মানুষ সেই আস্থা-বিশ্বাস আমার উপর রাখে। এলাকার মুরুব্বিদের পরামর্শে মীরেরখীলকে সুন্দর ও নান্দনিক ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলবো।’
মীরেরখীলকে আধুনিক ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে এই ওয়ার্ডের মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করে দিলদার হোসেন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গ্রাম হবে শহর’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে এই গ্রামকে শহরের সুবিধাসম্পন্ন নাগরিক সুবিধায় পরিণত করতে চেষ্টা করবো। এজন্য আমি আমরণ ওয়ার্ডের মানুষের সাথে থাকতে চাই। তাদের সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থাকতে চাই। আমার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়ে সকলের উপকার করতে চাই। আমাদের ওয়ার্ডের মা-মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।’
বাংলাধারা/এফএস/এফএস













