২৩ অক্টোবর ২০২৫

মেরিন ড্রাইভে অভিযান, ৭ লাখ ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি আটক

কক্সবাজারের টেকনাফের তালিকাভুক্ত চার শীর্ষ মাদক কারবারিকে ৭ লাখ ইয়াবা ও বিলাসবহুল পাজেরোসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫’ সদস্যরা। সোমবার (২০ মে) ভোররাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাটুয়ারটেকে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর (ল’ এন্ড মিডিয়া) কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।

গ্রেফতাকৃতরা হলো, টেকনাফ পৌরসভার ডেইল পাড়ার হাজী মো. আলীর ছেলে আব্দুল আমিন (৪০), একই গ্রামের মৃত দীল মোহাম্মদের ছেলে জাফর আলম (২৬), সদর ইউনিয়নের গোদার বিলের আবু ছৈয়দের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (৩৫) ও মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে নুরুল আবসার (২৮)।

গ্রেফতার আবদুল আমিন আত্মসমর্পণ কারি ইয়াবা কারবারিদের একজন। আর আবদুল্লাহ টেকনাফ সদর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এবং উপজেলা যুবলীগ সভাপতি নুরুল আলমের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, গোপন তথ্যে খবর আসে- মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে শীর্ষ মাদক কারবারী আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যসহ মাদকের একটি বিশাল চালান বিলাস বহুল প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার শহরের দিকে আনছে। এমন তথ্যে সোমবার ভোররাত ৩টার দিকে র‌্যাব-১৫ এর একটি দল পাটুয়ারটেক মেরিন ড্রাইভ সড়কে চেকপোস্ট বসায়। এসময় কক্সবাজারগামী দ্রুতগামী একটি কালো রংয়ের পাজেরো স্পোর্টিং কার থামাতে সংকেত দিলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। পরে ধাওয়া দিয়ে তাদের থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। গাড়ির পেছনের ভেতরে বস্তা ভর্তি ৭ লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। এসময় গাড়িতে থাকা আব্দুল আমিন, আবদুল্লাহসহ মাদক সিন্ডিকেটের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

মিডিয়া কর্মকর্তা গ্রেফতারকৃতদের বরাতে আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুল আমিন ইয়াবা সম্রাট ও মাদক সিন্ডিকেট বার্মাইয়া সিরাজের ইয়াবার সব চালান সমুদ্রপথ দিয়ে মাছ ধরার ট্রলারযোগে নিয়ে আসতো। এ সকল ইয়াবার চালান দেশের অভ্যন্তরে এনে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে রেখে সুবিধাজনক সময়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের কাছে সরবরাহ করতো।

আবদুল আমিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকসহ নানা অপরাধে ১১টির অধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ, আব্দুল আমিনের ভাগ্নে। তিনি বাবা আবু সৈয়দ ওরফে গরু সৈয়দের দেখানো পথে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে গরু চোরাচালান করতো। এসময় বার্মায়া সিরাজের সাথে সখ্যতা গড়ে গরুর ব্যবসার আড়ালে তারা মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলাসহ ১০টির অধিক মামলা রয়েছে।

অপর গ্রেফতার নুরুল আবসার সম্পর্কে মো. আবদুল্লাহ’র ভগ্নিপতি ও জাফর-আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী। তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইয়াবার অর্থ সংগ্রহ করাসহ মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান এনে আব্দুল আমিন ও আবদুল্লাহ কাছে পৌঁছে দিতো।

জাফর আলমের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দু’টি মামলা রয়েছে।

অপর এক সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহকে রিমান্ডে নিলে তার সাথে কারবারে সম্পৃক্ত একাধিক জনপ্রতিনিধির নাম জানা যাবে। উখিয়া এলাকার এক জনপ্রতিনিধিকে আবদুল্লাহর বাবা আবু সৈয়দ ছেলে হিসেবে সম্বোধন করেন এবং আবদুল্লাহও ভাইয়ের মতো করেই যোগাযোগ রাখেন। এর বিনিময়ে প্রশাসনিক তদারকির কাজ করে এ জনপ্রতিনিধি আর্থিক সুবিধাও নিয়ে থাকে। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগ নেতারাও আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে নেতা বানিয়ে ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে সহায়তা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই তাকে রিমান্ডে এনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করার দাবি জানান সচেতন মহল।

আরও পড়ুন