বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে আটকে থাকা ৭০টি নামিদামি গাড়ি অবশেষে নিলামে তোলা হয়েছে। গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) মোংলা কাস্টমস হাউস এসব গাড়ি নিলামে তোলে। এর আগে, গত মাসে গাড়িগুলো বিক্রির জন্য মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কাস্টমস হাউসের কাছে হস্তান্তর করেছিল।
গাড়িগুলো ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও মোংলা কাস্টমস হাউসে দরপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে বিড করেছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি এসব দরপত্র খোলা হবে। যাচাই-বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে বিক্রয় আদেশ দেওয়া হবে।
এর মধ্যে বিলাসবহুল টয়োটা প্রাডো, ল্যান্ড ক্রুজার, এলিয়ন, ফিল্ডার, হাইব্রিড ভেসেল, এবং হারিয়ার গাড়ি রয়েছে। তবে শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক তিন সংসদ সদস্যের তিনটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি গত ২০ নভেম্বর নিলামে তোলা হলেও এখনও বিক্রয় আদেশ দেওয়া হয়নি।
দীর্ঘদিন বন্দরে পড়ে থাকা গাড়ি নিলামে তোলার কারণ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, পদ্মা সেতুর কারণে বন্দরে গাড়ি আমদানি বেড়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গাড়ি ছাড় না হওয়ায় বন্দর এলাকায় জায়গার অপচয় হচ্ছে। অনেক গাড়ি অকেজো বা বিকল হয়ে পড়ছে।
মোংলা কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার মো. রুবেল হাসান বলেন, “২০০৯ সালের ৩ জুন জাপান থেকে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। বর্তমানে বন্দর থেকে কাস্টমস রাজস্ব আয়ের ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ি থেকে। তবে গাড়ি ছাড় করতে দেরি হলে পণ্যের জায়গা সংকট দেখা দেয়। তাই নিলামের মাধ্যমে দ্রুত গাড়ি বিক্রি করা প্রয়োজন।”
তিনি আরও জানান, গত মাসে ৩০০টি গাড়ি কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ৭০টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে তোলা হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে নিলামে তোলা হবে।
গাড়ি নিলামে অংশগ্রহণকারী এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “নিলামের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দরপত্রে গাড়ির মূল্যের ৬০ শতাংশ না উঠলে তা অনুমোদন হয় না। দ্বিতীয় নিলামে বেশি দর পাওয়া গেলে বিক্রির সুযোগ থাকে। তবে নিলাম কমিটি অনেক সময় দাম কমায় না। ফলে গাড়িগুলো বারবার নিলামে তোলা হলেও বিক্রি হয় না।”
মোংলা কাস্টমসের নিলাম শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৪টি নিলামে মোট ২২০০ গাড়ি তোলা হয়। তবে এর মধ্যে মাত্র ২০০টি গাড়ি বিক্রি করতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দরে নিলামে তোলা গাড়িগুলো দ্রুত বিক্রি করা না হলে বন্দরের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই নিয়ম মেনে নিলাম কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।













