বোরহান উদ্দীন »
খুচরা বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই, যার দাম কমছে কিংবা স্থির। প্রতিদিনই বাড়ছে কোনো না কোনো পণ্যের দাম। আমদানি করা পণ্যের মূল্য আঁকাশ ছোঁয়া। স্বস্তির খবর বলতে পাইকারি বাজারে গমের দাম কমার কথা বলা যায়। ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হওয়াতে পাইকারি বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছে।
নগরের খুচরা বাজার থেকে শুরু করে পাইকারিবাজার ঘুরে সর্বত্রই ক্রেতাদের অসন্তোষ দেখা গেছে। গমের বাজার সামান্য আশা দেখালেও চালের বাজারের লাগাম কোনো ভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ৩০০-৫০০ টাকা । খাতুনগঞ্জের আড়তদারদের তথ্যমতে, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে চিনিগুঁড়া চালের দাম বস্তায় ৪৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। কদিন আগে ২ হাজার ৭শ টাকায় বিক্রি হওয়া জিরাশাইল চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা, ১ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকায়, ১ হাজার ৭শ টাকায় বিক্রি হওয়া মোটা চালের দাম এখন ১ হাজার ৯শ টাকা , ২ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া মিনিকেট সিদ্ধ এখন ২ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় সব চালের দাম গড়ে বেড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা।
বোরো মৌসুমে চালের এমন দাম বৃদ্ধির কারন জানতে চাইলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, চালের বাজার নিয়ন্ত্রন করে বড় বড় কয়েকটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠি। তাদের কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন।
চালের বাজারে যখন এই দুর্যোগের ঘনঘটা তখন কিছু টা আশার আলো দেখায় গমের বাজার। ভারত থেকে গম আসা শুরু হওয়ার পর পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বুধবার খাতুনগঞ্জে প্রতি মন গম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৩০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। তিন দিন আগেও যা ছিল দেড় হাজার টাকার বেশি।ভারতের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা থেকেও গম আনার উদ্যোগ নেও্যা চলছে বলে জানিয়েছে গম আমদানিকারকেরা। গমের সংকট দ্রুত কেটে যাবে বলে এবং খুচরা বাজারেও দ্রুত সময়ের মধ্যে গমের দাম কমবে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেলের দাম না বাড়লেও খুচরা বাজারে তেল বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দামের বেশি।ভোজ্যতেলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের অভিযোগ, শোনা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার কথা কাটাকাটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, চাল, ডাল, ডিম, আলু, সবজী সবকিছুর এমন অস্বাভাবিক দাম কোন টা কিনবো কোন টা কিনবো না কিংবা কিনলেও কতটুকু কিনবো এসব ভাবতে ভাবতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয়ে যাচ্ছি।
মূল্যবৃদ্ধির এই প্রতিযোগিতায় সামিল হয়েছে নিত্যব্যবহার্য দৈনন্দিন যাপনের ছোট ছোট সব পণ্য। এই যেমন টুথপেস্ট, হুইল পাউডার, এরসোল, বিকুট-চানাচুর থেকে শুরু নাপা ট্যাবলেট সব পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। এখন ৮৫ টাকার এক কেজি হুইল পাউডারের দাম ১০০ টাকা। ১০০ টাকার পেপসোডেন্ট টুথটেস্ট ১২০ টাকা। ২০ টাকার এনার্জি বিস্কুট ৩০ টাকা, ৪০০ টাকার এরসোল ৪৯০ টাকা। অর্থাৎ সব কিছু ক্রয় ক্ষমতার বাইরের যাওয়ার দিকে।
নগরের রেয়াজউদ্দীন বাজারে আসা গৃহিণী আফরোজা আকতার বলেন, ওষুধ থেকে শুরু করে চাল-ডাল, ডিটারজেন্ট গাড়ি ভাড়া সব ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। কিন্তু আয় আগের মত।নিম্নবিত্তের কথা বাদই দিলাম, মধ্যবিত্তের আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য আনবে কে ?













