২৫ অক্টোবর ২০২৫

রাঙামাটিতে লালসার শিকার ছাত্রী; পুলিশি অভিযানে শিক্ষক আটক

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি »

রাঙামাটি শহরে প্রাইভেট পড়ানো ও গান শেখানোর সময় ১০ শ্রেণীর পাহাড়ি ছাত্রীকে (১৬) দীর্ঘদিন ধরে যৌন ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগে শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত রণজিত পাটোয়ারী (৫৫) শহরের আসামবস্তি এলাকার বাসিন্দা।

তার বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী ছাত্রীর খালা কর্তৃক প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কোতয়ালী থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন।

তিনি জানান, ‌‌‘ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়েই আমরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এর ৯(১)(খ) ধারায় মামলা নিয়েছি। যাহার নাম্বার-৯,তারিখ: ১২/০৬/২০২১ইং।’ আসামীকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওসি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভিকটিমের মা চাকুরি সূত্রে কক্সবাজার অবস্থান করায় শহরের লুম্বিনী পাহাড় এলাকার নানীর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতো উক্ত কিশোরী। রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির এই শিক্ষার্থী গত তিন বছর ধরেই অভিযুক্ত রণজিত পাটোয়ারীর কাছে পড়াশোনা ও গান শিখতো। আসামবস্তির একটি ভাড়া বাসায় ও নিজ বাসায় পৃথকভাবে ব্যাজ করে প্রাইভেট পড়া এবং গান শেখায় রনজিত পাটোয়ারী।

ওই ছাত্রী ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল প্রথমবার রণজিত পাটোয়ারীর নিকট শারীরিকভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য ভিকটিমকে বিভিন্ন রকম হুমকিও দেয় অভিযুক্ত। এরপর পরের বছর ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আবারও ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার পাশাপাশি ধর্ষণের চেষ্টা চালায় অভিযুক্ত শিক্ষক রনজিত পাটোয়ারী। হাতে পায়ে ধরে সেসময় নিজেকে ধর্ষিত হওয়া থেকে রক্ষা করলেও ধারাবাহিকভাবে শিক্ষকের লালসায়িত নির্যাতনের কারণে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে কিশোরী। এতে চরমভাবে তার শারীরিক ও মানসিক অবনতি হতে থাকে। বিষয়টি লক্ষ্য করে বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীটির পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্নভাবে কাউন্সিলিং করতে থাকে।

এসময় শিক্ষক রনজিত পাটোয়ারী কর্তৃক যৌন নির্যাতনের বিষয়টি নিজের এক বান্ধবী ও খালাকে অবহিত করে ভিকটিম নিজেই এই ব্যাপারে নিজ হাতে লিখে একটি অভিযোগ থানা পুলিশকে প্রদান করে। পরবর্তীতে মেয়েটির খালা বাদি হয়ে উক্ত ঘটনাগুলো উল্লেখ করে রনজিৎ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন।

কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন অভিযোগ প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করে জানান, আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে রাতেই অভিযুক্তকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেছি। সার্বিক বিষয়টি পর্যালোচনা করে আমাদের মনে হয়েছে যে, অভিযুক্ত এই ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকতে পারে। তাই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন