২৮ অক্টোবর ২০২৫

রাঙ্গুনিয়ায় হাটভর্তি গরু, মিলছে না ক্রেতার দেখা!

এম মতিন, রাঙ্গুনিয়া »

জিলহজ মাসের চাঁদ অনুযায়ী ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ৩ দিন। কোরবানির ঈদকে ঘিরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বসেছে গরুর হাট। আর কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে আসছেন খামারি ও বেপারিরা। কিন্তু হাটে বিপুল সংখ্যক গরু আসলেও করোনা ভাইরাসের কারণে বাজারে তেমন ক্রেতার দেখা মিলছে না।

করোনা ভাইরাস ও গরুর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ ‘লাম্পি স্কিন ডিজিস’ হওয়ায় কমে গেছে গরুর দাম। এতে বড় ধরনের লোকসানের আশংকা করছেন উপজেলার স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও রাঙ্গুনিয়ায় এই বছর ৭টি পশুর হাটের ইজারা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ২টি এবং উপজেলা প্রশাসনের ৫টি বাজার। অবশ্যই গত বছর ইজারা দেয়া হয়েছিল ১৩টি পশুর হাটের। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিয়েছিল ১১টি এবং পৌরসভার ২টি পশুর হাট অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।

এদিকে রাঙ্গুনিয়ায় ৭ টি পশুর হাট বসানোর অনুমোদন দেয়া হলেও উপজেলার চন্দ্রঘোনা, কোদালা বাজার, শিলক বৃহচক্রহাট, পদুয়া, সরফভাটা মীরেরখীল, সিকদার পাড়া, বেতাগীর মীর্জাখীল, বালুর চর, পোমরার, মালিরহাট, বুড়ির দোকান, হাজীপাড়া, পৌরসভার গোডাউন, চৌমুহনী, পারুয়ার, হাজানীহাট, কাটাখালী, হোচনাবাদের শ্চিন্তাপুর, মোগলেরহাট, লালানগরের আলমশাহ বাজার. ধামাইরহাট, রাজারহাট, ইসলামপুরের গাবতলসহ প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ভাসমান পশুর হাট বসানো হয়েছে। তবে অস্থায়ী এসব পশুর হাটের কোনটাতেও তেমন ক্রেতার দেখা নেই।

এ ব্যাপারে মোগলেরহাট বাজার ইজারাদার ও চেয়ারম্যান মো. নুরউল্লাহ জানান, হাটগুলোতে ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা দামের গরু উঠেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কেনা-বেচা হচ্ছে না।

এদিকে উপজেলার পশুর হাটগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে মনিটরিং করার নির্দেশ থাকলেও উপজেলার পশুর হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা স্বাস্থ্যবিধি কোনটাই মেনে চলছে না কেউ।

মঙ্গলবার ও বুধবার সরেজমিনে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটে গিয়ে দেখা গেছে, গরু আমদানির তুলনায় ক্রেতা কম। আর স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছিল ঢিলেঢালাভাবে। ক্রেতাদের মাস্ক পড়ে বাজারে ঢুকতে বলা হলেও বাজারের ভিতর লোকজনের মুখে তেমন মাস্ক দেখা যায়নি। কারও মাস্ক পকেটে, আর কারো থুতনিতে। এক কথায় উপজেলার কোরবানির পশুর হাটে ন্যূনতম কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই।

আবার অনেক ক্রেতা ও খামারিরা বাজার পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে ‘অব্যবস্থাপনা’র অভিযোগ তুলেছেন। কয়েকজন খামারি জানান, হাটে পানির লাইন নাই। মুল বাজারে যেটা আছে, সেটাতে আবার মাঝে মাঝে পানি থাকে না। নেই কোন টয়লেটের সুব্যবস্থাও।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, কোরবানির পশুর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমরা কাজ করছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু বিক্রি করতে সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, করেনাভাইরাসের কারণে শর্তসাপেক্ষে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৫টি ও পৌরসভায় ২টি পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ জীবানুনাশক স্প্রে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা না মানলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

রাঙ্গুনিয়া থানা ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলার পশুর হাটগুলোতে থানা পুলিশের টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জাল টাকা পরীক্ষায় হাটগুলোতে মেশিনও বসানো হয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন