২৬ অক্টোবর ২০২৫

রাঙ্গুনিয়ায় ভিন্ন আঙিকে ঈদ উদযাপন করেছে তরুণরা

মুহাম্মদ আব্দুল আলী »

টানা এক মাস সিয়াম সাধনার পরে পালিত হলো পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে নেই উৎসব মুখর সেই পরিবেশ।

মহামারি করোনাভাইরাসের আক্রমণে একদিকে স্তব্ধ গোটা পৃথিবী। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে পারেনি অনেক শহরবাসী। বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনের বাসায় বেড়ানোও যাচ্ছে না। ঈদ উৎসবের এমন অভাবনীয় চিত্র কোনোকালে দেখেনি কেউ। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও রাঙ্গুনিয়ায় তরুণরা ঈদের আনন্দকে উপভোগ করেছেন ভিন্ন আঙ্গিকে।

করোনা সচেতনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের মীরেরখীল গ্রামের তরুণ সমাজ কোনো আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে না গিয়ে সামাজিক দূরত্বকে গুরুত্ব দিয়ে সবাই মিলে বিরিয়ানির রান্না করে গেট টুগেদার করে নিজেরাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন।

মীরেরখীল গ্রামের এই তরুণদের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রামের মানুষের মাঝে করোনা সচেতনা বিষয়ে আরো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকে বলে উঠেছেন, ‘ভেবেছি কাছাকাছি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাবো, কিন্তু এখন আর বেড়াবো না, সবার সাথে ভিডিও কল করে কথা বলবো। আপনাদের মতো শিক্ষিত লোকেরা যেভাবে এই সামাজিক দূরত্ব গুরুত্ব দিয়ে করোনা সচেতনতা মেনে এমন উদ্যোগ সত্যিই অনুকরণীয়। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে, পরিবারের স্বার্থে এবং আমার নিজের স্বার্থে এই করোনা সচেতনাকে গুরুত্ব দেয়া দরকার।’

‘ঘরবন্দি’ মানুষের এবার রমজান মাস কেটেছে ঘরে থেকেই। রমজানে ছিল না কোনো ইফতার পার্টি, বন্ধ ছিল হোটেল রেস্টুরেন্ট। ইফতার নিয়ে ছিল না কোন রকমারি আয়োজন। বন্ধ ছিল নামি-দামি সব ইফতার বাজারও। ইতিহাসে হয়তো এবারই প্রথম কোনো রমজান কেটেছে।তবে মুখে মুখে শুভেচ্ছা বিনিময় হলেও হয়নি করমর্দন বা কোলাকুলি।

এদিকে করোনার কারণে মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ না থাকায় সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে চলছে সুনশান নিরবতা। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং অকারণে ঘোরা ফেরা বন্ধ করতে রাস্তায় নিরলস দায়িত্ব পালন করছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা। সব মিলিয়ে এক ব্যতিক্রম এবং অচেনা ঈদ উদযাপন করছেন সবাই।

এমন পরিস্থিতিতে ঈদের আনন্দকে কিছুটা হলেও উপভোগ করতে চেষ্টা করেছেন মীরেরখীল গ্রামের এই তরুণরা। এমন উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এলাকার তরুণ ও রোটারিয়ান প্রকৌশলী মাহমুদুল করিম বলেন, ‘করোনাভাইরাসে প্রকোপ রোধে এই ঈদে সামাজিক দূরত্বকে প্রাধান্য দিয়ে কোনো আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে না গিয়ে এলাকার তরুণদের এই ঈদের আনন্দ দিতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে। আমরা আমাদের কাজে-কর্মে এই সামাজিক দূরত্বকে গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছি এবং করোনা সচেতনতায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি।

ব্যতিক্রমী এই ঈদ উদযাপনে এলাকার তরুণদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগ্রাবাদ মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হসপিটালের সহকারী প্রকৌশলী, রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল করিম, বাংলাধারা ডটকম’র সহ-সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল আলী, গ্লেক্সিকোস্মাইথ ক্লাইন বাংলাদেশ লি.- এর মার্কেটিং রিপ্রেজেন্ট অফিসার আরিফ সিকদার, তরুণ উদ্যোক্তা হাজারো তরুণে স্বপ্নদ্রষ্টা খামারি মিনারুল হক, ভিডিও কলের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন প্রিলেন্সার ও সফ্টোয়ার ডেভল্যাপার মোরশেদ সরওয়ার সিকদার, তরুণ সংগঠক জুবায়েদ, মীরেরখীল এস.এন.ও’র সদস্য আজিজ ও জসিম, ব্যবসায়ী নওশাদ, সাইফুল ইসলাম, কামাল উদ্দীন প্রমুখ।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন