জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় শাশুড়িকে হত্যার পর ৬ টুকরো করে বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা দিয়েছে পুত্রবধূ।
শনিবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের মধ্য উমখালী হাজির পাড়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের ছেলের সহযোগিতায় পুলিশ রবিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় বাড়ির নলকূপের পাশে পোতা অবস্থা থেকে মায়ের ৬ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় ঘাতক পুত্রবধূ রাশেদা বেগমকে (২৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাশেদা কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীর ছোট চৌধুরী পাড়ার সৈয়দ নুরের মেয়ে।
নিহত মমতাজ বেগম (৬০) রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের মধ্য উমখালী হাজির পাড়ার মৃত আবদুল কাদেরের স্ত্রী। পুত্রবধূ রাশেদা নিহতের আপন ভাতিজি।
মিঠাছড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আমির হামজা পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, নিহতের একমাত্র ছেলে আলমগীর কক্সবাজারের কলাতলীর হোটেলে চাকরি করেন। শনিবার নাইট ডিউটি থাকায় সন্ধ্যার আগেই চলে যান। রাতে শাশুড়ির সাথে বউয়ের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাশুড়ীকে হত্যার পর দুই হাত, দুই পা, মাথা বিচ্ছিন্ন করে বাড়ির নলকূপের পাশে মাটিতে পুঁতে ফেলেন। রবিবার সকালে বাড়ি আসার পর আলমগীর তার মাকে খুঁজলে মা তার সাথে রাগ করে চকরিয়ায় মেয়ের বাসায় গেছে বলে জানায়। সেখানে যোগাযোগের পর মা সেখানে যায়নি জানতে পেরে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চালান। দুপুরের বাড়ির নলকূপের পাশে নতুন খোঁড়া মাটি দেখে সন্দেহ হলে তা অল্প খোঁড়েই তার মায়ের শাড়ি দেখে স্থানীয়দের জানায়।
তিনি আরো জানান, পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে রামু থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় নিহত মমতাজ বেগমের দেহের ছয় টুকরা উদ্ধার করে।

রামু থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে রামু থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় নিহত মমতাজ বেগমের লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু করে। সন্ধ্যায় ৬ টুকরো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে মাথা, ২ হাত এবং ২ পা বিচ্ছিন্ন। পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশেদা বেগমকে আটক করা হয়েছে।
অভিযুক্ত রাশেদা বেগম জানান, নিহত মমতাজ বেগমের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি করে লাশ। পরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে বস্তাবন্দি করে লাশ মাটিচাপা দেন।
ওসি (তদন্ত) অরূপ বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, ৩ বছর পূর্বে নিহত মমতাজ বেগমের ছেলে আলমগীরের সাথে রাশেদা বেগমের বিয়ে হয়। এখনো তারা নিঃসন্তান। এছাড়া আটক রাশেদা বেগম মমতাজ বেগমের আপন ভাতিজি। রাশেদা বেগমের পৈত্রিক বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নে।













