বাংলাধারা ডেস্ক »
রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্তির পরও গ্রেফতার হয়ে প্রায় ১০ বছর কারাভোগের পর অবশেষে মুক্তি পেলেন একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জামালপুরের আজমত আলী।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে জামালপুর কারাগার থেকে হাই কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একটি হত্যা মামলায় ১৯৮৯ সালে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজমত আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিলের পাশপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করে আজমত আলীর পরিবার।
২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় আজমত মুক্তি পান। পরে তিনি চলে আসেন জামালপুরের গ্রামের বাড়ি সরিষাবাড়িতে। এর কয়েকদিন পরই পুলিশ ফের আজমতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। আজমতের মেয়ে বিউটি খাতুন এ ব্যাপারে হাইকোর্টে আপিল করেন। আইন সহায়তা কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কারাবাসী আজমতকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আপিল বিভাগের নির্দেশে বেলা ১১টার দিকে জামালপুর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেন। সাজা মওকুফ হওয়া আসামি একই মামলায় আবার কেন গ্রেফতার হলেন, এ দায় কার- এর জবাবে জামালপুর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নির্মল কান্তি ভদ্র বলেন, এর জন্য দায়ী আসামিপক্ষ। তাদের অবহেলাতেই এ ঘটনা ঘটেছে। মুক্তির বিষয়টি আগেই অবহিত করার দরকার ছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি। জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের ইজ্জত উল্ল্যা সর্দারের ছেলে আজমত আলী।
টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ঘোড়ামারা এলাকার ভেঙ্গুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম নিহত হন। আজমতের মেয়ে বিউটি আক্তার বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশের পরও আইনি জটিলতা দেখিয়ে বিনা দোষে বাবাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়। যে কারণে বাবার জীবন থেকে ১০টি বছর হারিয়ে গেল। তবে এখন বাবার মুক্তিতে আনন্দের জোয়ার বইছে পুরো পরিবারে।
মুক্তি পাওয়া আজমত আলী বলেন, বিনা দোষে আমাকে কারাভোগ করতে হয়েছে। মুক্তি পাওয়াটা আনন্দের তবে এই ১০ বছর বিনা কারণে কারাগারে থাকার বিচারটি আপনাদের কাছে দিলাম। জামালপুর কারাগারের জেল সুপার মকলেছুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশের কপি পাওয়া মাত্রই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তার মুক্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি/আরইউ













