ক্রীড়া ডেস্ক »
লিওনেল মেসি, ৩৫ বছরে পা রাখার আগে ক্লাব ফুটবল, জাতীয় দলে মিলিয়ে মোট ৪১টি ট্রফি জিতেছেন। বার্সেলোনা ও পিএসজির হয়ে জিতেছেন ১১টি লিগ শিরোপা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও আছে চারটি শিরোপা জয়ের তৃপ্তি। আর এ পর্যন্ত সাতবার হয়েছেন বর্ষসেরা। তার বয়সের চেয়ে বেশি রয়েছে শিরোপা জেতার গৌরব। অনেকের দৃষ্টিতে হয়ত সময়ের সেরা কিন্তু অমর নন কোনোভাবেই। তাইতো অমরত্বের লড়াইয়ে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন সুপার স্টার।
আর্জেন্টিনা বৈশ্বিক ফুটবলের পরাশক্তিদের মধ্যে একটি। তাদের অর্জন দুইটি বিশ্বকাপ ট্রফি। কিন্তু আর্জেন্টিনার তো দুটি বিশ্বকাপ জয়ের গল্পে তৃপ্ত থাকার, থেমে যাবার সুযোগ নেই। তাছাড়া বৈশ্বিক ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে তাদের সেরা হওয়ার গল্পতেও জমেছে ৩৬ বছরের ধুলো।
এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে আর্জেন্টিনা ও মেসি উভয়ই বিশ্বকাপের জন্য ক্ষুধার্ত। কাতার বিশ্বকাপে সে ক্ষুধা মিটবে কিনা, সে তৃষ্ণা নিবারণ হবে কিনা, এর উত্তর আপাতত সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়া যাক।
মঙ্গলবার কাতার বিশ্বকাপ মিশন শুরু করত যাচ্ছে লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনা। ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মত বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে বেশ কিছু রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক ও ক্ষুদে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি।
২০০৬, ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সর্বশেষ চার বিশ্বকাপে খেলেছেন মেসি ও রোনালদো। এবারের বিশ্বকাপ হবে মেসি ও রোনালদোর পঞ্চম বিশ্বকাপ।
ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন জার্মানির ম্যাথিউস। এখন পর্যন্ত মেসি খেলেছেন ১৯টি। আর ৭টি ম্যাচ খেললেই ম্যাথাউসকে টপকে বিশ্ব রেকর্ড গড়বেন মেসি। এজন্য সেমিফাইনালে উঠতে হবে মেসির আর্জেন্টিনাকে।
সেমি পর্যন্ত ৬টি ম্যাচ খেলবেন মেসি। গ্রুপ পর্বে ৩টি, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমি মিলিয়ে মোট ৬টি। সেমিতে হেরে গেলে তৃতীয়স্থান নির্ধারনীসহ ৭টি ম্যাচ হবে মেসির। অথবা ফাইনালে উঠলেও এই আসরে ৭টি ম্যাচ হয়ে যাবে মেসির। তাতেই বিশ্বরেকর্ডের মালিক হবেন তিনি।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ২১টি ম্যাচ খেলেছেন কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনা। এখন পর্যন্ত ১৯টি ম্যাচ আছে মেসির। এবারের আসরের গ্রুপ পর্বে ৩টি ম্যাচ খেললে মেসির ম্যাচ সংখ্যা হবে ২২টি। তাতে ম্যারাডোনাকে পেছনে ফেলবেন মেসি।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জয়ের স্বাদ পেয়েছেন জার্মানির সাবেক স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা। চারটি বিশ্বকাপে ১৭টি জয় আছে তার। আর মেসির জয় ১২টি। এবারের আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচ জিতলেই ক্লোসাকে পেছনে ফেলবেন মেসি। সেমিতে হারালেও সমস্যা নেই। তৃতীয়স্থান নির্ধারনী ম্যাচে জয় পেলেই হবে মেসির।
অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেক্সিকোর সাবেক ডিফেন্ডার রাফায়েল মার্কেজ। এই তালিকার দ্বিতীয়স্থানে আছেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনা। ১৬ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপ মঞ্চে এ পর্যন্ত ১২ ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেসি। এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে উঠলেই মার্কেজকে ছাড়িয়ে যাবেন মেসি।
এখন পর্যন্ত চারটি বিশ্বকাপ খেলে এরমধ্যে ২০০৬, ২০১৪ ও ২০১৮ আসরে গোল করেছেন মেসি। ২০১০ সালে গোল করতে পারেননি। এবার কাতার বিশ্বকাপে গোল করলে প্রথম আর্জেন্টাইন হিসেবে চার বিশ্বকাপে গোল করার রেকর্ড গড়বেন মেসি।
বর্তমানে দিয়াগো ম্যারাডোনা ও গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সমান বিশ্বকাপে ৩টি করে গোল করেছেন। ম্যারাডোনা ১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯৪ বিশ্বকাপে এবং বাতিস্তুতা ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২ বিশ্বকাপে গোল করেছেন।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১০ গোল করেছেন বাতিস্তুতা। বাতিস্তুতাকে টপকাতে ৫ গোল লাগবে মেসির। বর্তমানে মেসির মোট গোল ৬টি। ২০০৬ সালে ১টি, ২০১৪ সালে ৪টি এবং ২০১৮ সালে ১টি গোল করেছিলেন মেসি।













