মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীস্থ বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত ও হিসাববিজ্ঞানের অংক করাতে অনীহা মহিলা শিক্ষকদের। থিউরি পড়াতে অভ্যস্থ ৪ নারী শিক্ষকা। এছাড়াও শ্রেণীকক্ষেই শিক্ষক ও ছাত্রদের মোবাইলের ব্যবহার এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম ছাড়াও নিয়মানুবর্তিতায়ও ঘাটতি রয়েছে। কারণ, শিক্ষকরা স্ব স্ব শ্রেণী কার্যক্রমের উপস্থিত হতে যেমন বিলম্ব করেন, তেমনি শ্রেণি কার্যক্রম শেষ না করেই বেরিয়ে আসার ঘটনাও বিরল নয়।
অভিযোগ রয়েছে, এই স্কুলে একাউন্টিংয়ের ৪জন শিক্ষিকা রয়েছে। এঁরা হলেন খালেদা আক্তার, আমেনা বেগম, ফারজানা আক্তার ও মরিয়ম বেগম। এসব শিক্ষিকারা শ্রেণীকক্ষে শুধু থিউরি পড়ান। কিন্তু অংক না করানোর ফলে শিক্ষার্থীরা বেকায়দায় পড়েছে। এদিকে মাত্র ৪দিনের ঘোষণায় পরীক্ষা নেয়া হবে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে। যদিও ৯ এপ্রিল থেকে রুটিন দেওয়া হয়েছে কিন্তু সরকার শুক্র ও শনিবার বন্ধ ঘোষণা করায় রবিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তবে সিলেবাস শেষ না করেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, মাত্র ৪দিনের ঘোষণায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা শুনে শিক্ষার্থীরা বেকায়দায় পড়ে গেছে। সিলেবাস শেষ না করেই পরীক্ষা নিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। রুটিনে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরও নেই। প্রশ্ন উঠেছে প্রধান শিক্ষক তাহলে কি পরীক্ষার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। আবার ৯ ও ১৬ এপ্রিল শনিবার হওয়ার কারনে ওই দিনের পরীক্ষাগুলো পেছানো হবে।

এদিকে, স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণীর ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, একাউন্টিং, ফিন্যান্স ও ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষক ঘাটতি নিয়ে ওয়েলফেয়ার বিভাগের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার লেশ মাত্রও নেই। অবৈধ উপায়ে নিয়োগ পাওয়ায় শ্রেণি কার্যক্রমে মনোনিবেশ করতে পারছেন না নিজেদের অজ্ঞতার কারণে। কারণ, নিয়োগ কমিটি মেধাবীদের বাদ দিয়ে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অনভিজ্ঞ ও কম মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়ায় রেলওয়ের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত জ্ঞান অর্জন করতে পারছে না।
আরও অভিযোগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালিত স্কুলগুলোতে পড়ালেখার মান খুবই খারাপ। ৯০ দশকের পর থেকে স্কুলগুলোকে ক্রমশ পড়ালেখার মান নিম্নমুখী হওয়ায় খোদ রেল কর্মকর্তা কর্মচারীর পোষ্যরা পড়তে নারাজ। এমনকি মেধাবীদের ও একই পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে একজনকে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েও শিক্ষার্থী পাচ্ছে না মেধাবী পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে।
অভিযোগ রয়েছে, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, একাউন্টিং, ফিন্যান্স ও ইংরেজী শিক্ষক অনেকটা নেই বললেই চলে। কিছু কিছু স্কুলে অস্থায়ী বা অতিথি শিক্ষক দিয়ে কোনমতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে পাহাড়তলীস্থ বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র শীল বাংলাধারাকে বলেন, বন্ধের নির্দিষ্টতা না থাকায় পড়ালেখা ও পরীক্ষা নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। প্রথম পর্যায়ে ২৬ এপ্রিল ও পরে ২০ এপ্রিল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসায় একটু বেকায়দায় আছি। আর আগে যদি আবার বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় তাহলে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। শ্রেণীকক্ষে একাউন্টিংয়ের অংক করানো হয় না— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সিলেবাসে থিউরি থাকলে অংক করাবে কিভাবে।’ অথচ সিলেবাসে অংক রয়েছে— এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।













