২৩ অক্টোবর ২০২৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ যুবক গ্রেফতার

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র সরবরাহকারী দলের আরও এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৫’র সদস্যরা। কক্সবাজারের আশ্রয় ক্যাম্পে অপরাধকাণ্ডে জড়িত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সদস্য ও সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহকালে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এসময় তার কাছ থেকে ৩টি ওয়ান শুটার গান, একটি থ্রি কোয়াটার গান, ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি মোবাইল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করে র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার সদরের বাহারছড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

আটক আরিফ হোসেন ওরফে নাইগ্যা (২৭) ১নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প হ্নীলার মুচনীর বি ব্লকের বাসিন্দা। তার আগে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) একই ঘটনায় চকরিয়া হতে তিনজনকে অস্ত্রসহ আটক করে র‍্যাব-১৫।

লে. কর্ণেল সাইফুল বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা বাহিনীর কাছে অস্ত্র সরবরাহের খবর পেয়ে বাহারছড়ায় তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয়। র‍্যাবের অভিযান টের পেয়ে পালানোর সময় একজনকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৩টি ওয়ান শুটার গান, এটি থ্রি কোয়াটার গান, ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি মোবাইল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১৫ অধিনায়ক আরও বলেন, আরসা সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহকারিদের চিহ্নিত করে আটক করছি আমরা। ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যারা লিপ্ত তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সামরিক নিপীড়ন শুরুর পর আশির দশক থেকেই হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পাড়ি জমানো আরম্ভ করে। ২০১৭ সালের আগে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়াবহ নিপীড়ন শুরু হলে এক বছরে চলে আসে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিতে রাজি হয় বাংলাদেশ। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অফিসের তথ্যমতে, উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ আশ্রয় ক্যাম্পে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ইউএনএইচসিআরের পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি রয়েছে। তবে, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নিবন্ধন অনুসারে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৬ জন।

আর আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে কিছু বিপথগামী সদস্য ক্যাম্পগুলোতো অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছে। গত ছয় মাসে ৩০-৩৫ রোহিঙ্গাকে খুন, ঘরে অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, হানাহানিসহ বিভিন্ন অপরাধ কান্ডে বিষিয়ে তুলা হয়েছে সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় প্রশাসনকে। যেসব কথিত সংগঠনের নামে তারা অপকর্মে লিপ্ত তাদের মাঝে আরসা একটি। প্রশাসন তাদের বিষদাঁত ভাঙ্গতে ততপরতা শুরু করেছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ চক্রের চার সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। চকরিয়া থেকে গ্রেফতারকৃতদের চকরিয়া থানায় ও কক্সবাজার থেকে গ্রেনেড করাকে কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন