৫ নভেম্বর ২০২৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্যানুসন্ধানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খান। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে তিনি আইসিসির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ক্যাম্পে যান। সকাল ১০টায় তার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১ ওয়েস্ট ক্যাম্পের সিআইসি অফিসে যান এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, সাক্ষাৎকালে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কিভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধন ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া গণহত্যা চালানো সর্বশেষ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে কিভাবে পালিয়ে এসেছিল তার বর্ণনা দেন। এসময় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন নারী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারাও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের রোহিঙ্গা নারীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন ধর্ষণের বিস্তারিত বিবরণ দেন।

পরে আইসিসির প্রতিনিধি দল উখিয়া বালুখালী ক্যাম্পের ৯ ও ১২ নম্বর ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং সেখানেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একাধিক নারী ও পুরুষ প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলেন। বিকেলে আইসিসির চীফ প্রসিকিউটরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে ফিরে আসেন।

নেদারল্যান্ডের হেগভিত্তিক আইসিসির আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতন গণহত্যা নিয়ে তদন্ত করছে আইসিসি প্রসিকিউশন বিভাগ। রোহিঙ্গার উপর গণহত্যার অভিযোগের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার চারদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন করিম খান। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যারা রোহিঙ্গা জেনোসাইডে জড়িত, তাদেরকে বিচার ও জবাবদিহির আওতায় আনতে চান আইসিসি।

বুধবার (৫ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজারে পৌঁছে বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নেদারল্যান্ডসের আইসিসির এই আইনজীবী।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বুধবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম এ খান কক্সবাজার পৌঁছান।
তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে আসেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কমিশনের সঙ্গে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ও তাদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং ক্যাম্পের নারী ও শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে উল্লেখ করেন আইসিসি কৌঁসুলি ।

বৃহস্পতিবার আইসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নারী ও পুরুষ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেন। যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা নেদারল্যান্ডসের এই আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন