২৪ অক্টোবর ২০২৫

র‍্যাব পরিচয়ে প্রেম করে পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণ, কাঁধে ছিল আরও ৯ মামলা

বাংলাধারা প্রতিবেদক »

মো. জাহিদ হাসান ওরফে বোমা জাহিদ। তিনি কখনও সাজেন নাহিদ আবার কখনও সজিব। নিজেকে পরিচয় দিতেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হিসেবে। আবার কখনও সদস্য বনে যেতেন র‍্যাবের। দুই বিয়ের পর এভাবেই মিথ্যে পরিচয়ে গড়ে তোলেন এক পোশাকশ্রমিকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক। এরপর বিয়ের কথা বলে ঢাকার এক আবাসিক হোটেলে নিয়ে করেন ধর্ষণ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র, ডাকাতি, মাদক, প্রতারণা, বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন অপকর্মের ১০টি মামলা। গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে ইপিজেডের একটি কারখানায় নেন নাইট গার্ডের চাকরি। সর্বশেষ ওই পোশাককর্মীর করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব-৭)।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিইপিজেডের এম.জেড.এম নামে পোশাক কারখানা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র‍্যাব।

গ্রেফতার জাহিদ হাসান যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার মৃত আকবর সরদারের ছেলে। যশোরে তার এক স্ত্রী এবং দুটি সন্তান রয়েছে। চট্টগ্রামেও তার আরেকটি স্ত্রী রয়েছে।

র‍্যাব জানায়, আসামি জাহিদ ভিকটিমকে প্রায় সময়ই বিয়ের প্রলোভন দেখাতো এবং মোবাইলে তার মা ভাই, বোন এর সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দিত। গত ২ আগস্ট জাহিদ ভিকটিমকে তার বাড়ি যশোরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে বলে জানায়। এজন্য তার মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য ভিকটিমকে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জাহিদ ভিকটিমকে ঢাকায় রমনা মডেল থানার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় এবং সেখানে ভিকটিমকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষনের পর জাহিদ ভিকটিমের কাছে থাকা ৩ হাজার ৮’শ টাকা এবং গলার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ভিকটিম হোটেল থেকে বেরিয়ে একজন ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় রমনা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যান এবং জাহিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রমনা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জানান, যশোরের ৯ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি জাহিদ গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম এসে নাম পরিবর্তন করে কখনও নাহিদ আবার কখনও সজিব নামের ছদ্মবেশে নাইট গার্ডের চাকরি করতো এবং নিজেকে কখনও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আবার কখনোও র‌্যাব সদস্য বলে পরিচয় দিত। সে ওই পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণ মামলার ঘটনার সাথে জড়িত ও একাধিক অস্ত্র, ডাকাতি, মাদক, প্রতারণা, বিস্ফোরক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করে।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামের সিইপিজেডের এমজেডএম কোম্পানীতে চাকরি নেওয়ার সময় সে নিজেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য বলে উল্লেখ করে এবং র‌্যাবে চাকরি করেছে বলে ভূয়া তথা প্রদান করে। বর্তমানে সে এলপিআরএ আছে বলে জানায়। এছাড়াও আশেপাশের মানুষের কাছে সে নিজেকে বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিত।

তিনি বলেন, আসামি জাহিদ যশোরে ৯ মামলা হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রামে বিভিন্ন নামে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করলেও তার অপরাধ করার প্রবনতা  সে ত্যাগ করতে পারেনি এবং চট্টগ্রামেও সে ধর্ষনের অপরাধে জড়িয়ে যায় এবং অবশেষে আমরা তাকে গ্রেফতার করি।

বাংলাধারা/আরএইচআর

আরও পড়ুন