বাংলাধারা প্রতিবেদন »
রাত পেরুলেই কাঙ্ক্ষিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই অনুযায়ী ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ৫ আগস্ট চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও ৪১ জন সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৪ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হয়। প্রশাসক হিসেবে খোরশেদ আলম সুজনকে নিয়োগ দেয় সরকার।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে প্রায় ১০ মাস পিছিয়ে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোটগ্রহণ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ কয়েকটি দলের নেতারা এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। এরমধ্যে রয়েছেন প্রধান দুই দলের হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়াও রয়েছেন ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী মাওলানা এম.এ মতিন (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম), ইসলামিক ফ্রন্টের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন’র মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)।
১৪ সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী রয়েছেন ৫৭ জন। সাধারণ ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩৯ ওয়ার্ডে। ১৮নং ওয়ার্ডে হারুনুর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। আর ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তবে ওই ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩৯ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৬৮ জন প্রার্থী।
গত ৮ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়। সোমবার রাত ১২টা থেকে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শেষমুহূর্তে প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত ছিল নগরী। মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছিল চিরচেনা সেই বন্দরনগরী।
প্রচারণার শুরু থেকেই সংঘাত-সহিংসতার কারণে নির্বাচনকে ঘিরে রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণে মাঠে থাকবে ১৪ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নির্বাচনে ৭ হাজার ৭৭২ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সেই সঙ্গে ২৫ প্লাটুন বিজিবি, থাকবে র্যাবের ৪১টি টিম। এ ছাড়া পুলিশের রিজার্ভ টিম ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে নির্বাচনী এলাকায়। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ৪১৬টি কেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএম’র মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
৪১টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৭৩৫টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।
ভোটগ্রহণে ৭৩৫ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪৩৯ টি ভোটকেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্র হিসেবে চিহিৃত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ৩০৬ ভোটকেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহিৃত করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে নজর বেশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
মাঠে থাকবেন ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে, বিজিবি প্লাটুন প্রতি একজন, র্যাব সিপিসির সঙ্গে তিন জন করে ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন।
ভোটগ্রহণে দায়িত্বে থাকবেন ১৬ হাজার ১৬৩ জন কর্মকর্তা। সকলকে ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৫ হাজার ৯০২ জন এবং পোলিং অফিসার ১০ হাজার ২৬৮ জন।
বাংলাধারা/এফএস/এআর