বাংলাধারা প্রতিবেদন »
বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষৎ এর উদ্যোগে মনোমুগ্ধকর কবিতা সন্ধ্যা ২৬ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারি হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কবিতা সন্ধ্যায় পাঁচ কবির কবিতায় আবৃত্তি শৈলীতে মুগ্ধতা ছড়ান একঝাঁক তরুণ আবৃত্তিশিল্পী।
হেমন্তের হিমেল সন্ধ্যায় হলভর্তি দর্শকের উপস্থিতিতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় চলতে থাকে একের পর এক কবিতা। অনুষ্ঠানের পাঁচ কবি হলেন- জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মহাপরিচালক কবি মিনার মনসুর, কবি-সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি-সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি ও প্রাবন্ধিক অজয় দাশ গুপ্ত ও কবি-সাংবাদিক রাশেদ রউফ।
বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষৎ এর সভাপতি কবি ও সংগঠক জিন্নাহ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষৎ এর সাধারণ সম্পাদক আহমেদ খসরু। এপর শুরু হয় কবিতা সন্ধ্যার মূল পর্ব।
প্রথমে কবি রাশেদ রউফের ‘ভালোবাসি আমি আমার দেশ’ কবিতা নিয়ে ইতু সাহার গ্রন্থনায় ও সন্দীপন সেন একার নির্দেশনায় বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের শিশুরা পরিবেশন করে মনোমুগ্ধ আবৃত্তি। এসময় স্রোতাদের মুর্হূমুহু করিতালিতে অনুষ্ঠানে ভিন্ন আবহের সৃষ্টি হয়। এরপর একক আবৃত্তি করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ-এর সদস্য সুতপা মজুমদার, দেবলীনা চৌধুরী, সন্দীপন সেন একা, তূর্ণা দাশ ও হিমানী মজুমদার।
আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পী রুহিনা চৌধুরী আবৃত্তি করেন কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরীর কবিতা- সতীদাহ এবং কবি মিনার মনসুর-এর কবিতা- পা দুটিকে বলি। শ্রাবণী দাশগুপ্ত আবৃত্তি করেন কবি অজয় দাশগুপ্তের কবিতা- ভালোবাসা, ঋণ, নিলাদ্রী, বয়স।
শ্রাবণী দাশগুপ্ত ও আরমান হাফিজ দ্বৈত আবৃত্তি করেন বিশ্বজিৎ চৌধুরীর কবিতা কবি ও প্রেমিক। বর্ষা চৌধুরী আবৃত্তি করেন কবি রাশেদ রউফের কবিতা- সেই বন্ধু আর সেই ইশকুল। লুবাবা ফেরদৌসী সাইকা আবৃত্তি করেন কবি মিনার মনসুরের কে, কবি, তবুও, গঙ্গা ও নাফ এবং কবি ওমর কায়সারের কবিতা জলের তলার গান। উমেসিং মারমা উর্মি আবৃত্তি করেন রাশেদ রউফের কবিতা দুচোখে থাকুক রঙিন স্বপ্ন এবং ওমর কায়সারের লিলি গাঙ্গুলী পাখি নয়।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কবি মিনার মনসুর বলেন, কবিতার ছন্দে কবিরা আমৃত্যু অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও গণমানুষের কথা বলে থাকেন। এই বলার মধ্যে দিয়ে তারা সামাজিক দায়িত্বও পালন করেন। তিনি আরো বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি বা গোষ্ঠী মানুষ ও দেশকে যত বিভক্ত করে, তার বিপরীতে কবি তার কবিতায় সবাইকে শান্তি ও ঐক্যের পথে উজ্জীবিত করে। তাই বলা যায়, কবিতার প্রয়োজনীয়তা মানুষ, সমাজ এবং রাষ্ট্রে সবসময়ের জন্য দরকার।
অনুষ্ঠানে কবি রাশেদ রউফ বলেন, কবিতা মানুষকে মানুষের জন্য ভাবাতে সাহায্য করে। মানুষের মনে মানবিকতার মূল্যবোধকে জাগ্রত করে তুলতে সহায়তা করে। একজন সৃজনশীল, ভাবুক মন যা ভাবে তা কবিতার মধ্যে ফুটিয়ে তোলে। কবিতা দ্রোহ আর বিজয়ের সোপান। কবিতা মানুষের মনকে নাড়া দেয়, আন্দোলিত করে এবং অনুরণিত করে। কবিতা কখনো মানুষকে কাঁদায় আবার কখনো ভাবায়। এককথায় কবিতা সময়ের সাথে বহমান। 
তিনি আরো বলেন, মনের প্রতিটি আবেগ, প্রতিটি ভাংচুর দ্বিতীয় সত্তা হয়ে কথা বলে আমাদের মনের সঙ্গে। দীর্ঘ সেইসব আলাপন পর্ব। সেই দ্বিতীয় সত্তার বদৌলতে জন্ম নেয় সাহিত্য। সৃষ্টির ঠিক কোন ভাঁজে আমাদের চাওয়া-পাওয়া মিশে থাকে আর ঠিক কোথায় গিয়ে তা আমাদের অনির্বচনীয়কে ছুঁয়ে যায়, সে-রহস্য আজো আমাদের মনে হাতছানি দেয়। তন্নতন্ন করে খুঁজি সে-পথের দিশা। শব্দগুলোকে প্রতিদিনের অর্থ থেকে বিমুক্ত করতে পারলে তবেই কবিতার জন্ম হয়, তা সাহিত্য হয়ে ওঠে।
এছাড়া অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন কবি-সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি-সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি ও প্রাবন্ধিক অজয় দাশ গুপ্ত।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম
				












