‘গত একদশক আগেও চান্দেরগাড়ি (জিপ) ছাড়া রামুর পাহাড় ঘেরা ইউনিয়ন কচ্ছপিয়া-কাউয়ারখোপ-ঈদগড় ও গর্জনিয়ায় যাবার বিকল্প ছিল না। তাও নির্দিষ্ট কিছু সময়েই জড়ো হয়ে যেতে হত। কিন্তু বর্তমান সরকারের টানা সময়ে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এখন নামিদামি যানবাহন নিয়ে দিবারাত্রি যেকোন সময় এসব এলাকায় যাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এনে গত দুইবারের সংসদ সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমল আমাদের যোগাযোগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে গ্রামকে শহরে রূপান্তর করেছেন। আমি গত একযুগ পর প্রবাস হতে এসে সেটি অবলোকন করে বিমোহিত হয়েছি। সেই কৃতজ্ঞতায় নৌকার জনসভায় এসেছি।’
কক্সবাজারের রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সুখমনিয়া গ্রামের অধিবাসী প্রবাস ফেরত আবদুল হাকিম (৫৪) এসব কথা বলেছেন। শুধু হাকিম নয়, জনসভায় আসা অগণতি কর্মী একইভাবে শেখ হাসিনার উন্নয়নে উপকার ভোগী একইভাবে কৃতজ্ঞতা জানাতে এসে আগামীতেও নৌকার জয় কামনা করেছেন।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে রামু খিজারী স্টেডিয়ামে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নৌকার সমর্থনে স্মরণকালের বিশাল জনসভায় লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
জনসভায় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন সমূহের উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও কেন্দ্রভিত্তিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, ধর্মীয় ও পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বেলা ২টা থেকেই রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে হাজার হাজার জনতা নেচে-গেয়ে এবং মিছিল সহকারে স্মরণকালের এ বিশাল জনসভায় যোগদান করেন। জনসভায় আসেন কক্সবাজার সদর ও ঈদগাঁও উপজেলার নৌকার তৃণমূল কর্মীরা।
খিজারি স্টেডিয়ামের উত্তর প্রান্তে নির্মিত বিশাল উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুরের পর থেকে চলে নেতাকর্মীদের বক্তব্য। জনসমাবেশকে ঘিরে জনতার বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস ছড়িয়ে পড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে চৌমুহনী, বাইপাস ফুটবল চত্বরসহ আশপাশের ৩ কিলোমিটার সড়কে।
লাখো জনসমুদ্রে সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, রেল লাইন, আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অনেক মেগা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করে সরকার কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। চার লেনের সড়ক, বড় বড় সেতু নির্মাণ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। করোনা মহামারী এবং ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধে বিশ্বের অনেক দেশ বিপর্যস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব। বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ তার প্রমাণ পেয়েছে। তাই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় এনে এদেশের ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তা, অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নৌকা প্রতীককে বিপুল ভোটে জয়ী করতে হবে।
এমপি কমল বেলন, বিগত ১০ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছি। প্রতিটি গ্রাম, অলি-গলি আমি চষে বেড়িয়েছি। সেবা করতে গিয়ে কখন রাত, কখন দিন বুঝতে পারিনি। আমার নিরলস পরিশ্রমে অসংখ্য মানুষকে সেবা দিয়েছি। নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, রামু কলেজ ও খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় সরকারিকরণ ও বিকেএসপি স্থাপনের মাধ্যমে রামুকে শিক্ষার নগরী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এমপি কমল আরো বলেন- যারা দলের দূর্দিনে পাশে ছিলো না, মানুষের দূর্দিনে খবর নেয়নি, করোনাকালে ঘরের বাইরে আসেনি- তারা এখন নৌকার মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের মানুষ কখনো দেখেনি। অনেকের নামও মানুষ জানেনা। অনেক নেতা ৩ উপজেলার সকল ইউনিয়নের নাম ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নামও বলতে পারবে না। এসব নব্য নেতারা এখন নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মতোই আমার মনোনয়ন ঠেকাতে একজোট হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঠাঁই দলেও নাই, মানুষের হৃদয়েও নাই। এরা নিশ্চিত ভরাডুবি জেনেই দলের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য মনোনয়ন নাটক শুরু করেছে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন- কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও) আসনের এমপি কমল বিগত ১০বছর দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সুখে-দুখে পাশে ছিলেন। রামুর ১১টি ইউনিয়নের সড়ক, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল-ক্লিনিক দেখলেই বুঝা যায়, উন্নয়নের রূপকল্প। তাই উন্নয়নের রূপকর্মী কমলই আওয়ামী লীগের যোগ্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, এমপি কমলের স্ত্রী সৈয়দা সেলিনা সরোয়ার, যুবলীগ নেতা খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গণি, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদুল আলম, রামু উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, সাধারণ ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামশুল আলম, ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো, রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো. ঈসমাইল নোমান, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, রামু উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তপন মল্লিক ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মো. আবদুস শুক্কুরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তপন মল্লিক ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মো. আবদুস শুক্কুরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য নুরুল হক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ, গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কবির, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক, সহ সভাপতি আনছারুল হক ভূট্টো, গর্জনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী, রামু উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি শফিকুল আলম কাজল, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম কবির মেম্বার, আইয়ুব সিকদার, ওসমান সরওয়ার মামুন, জহির উদ্দিন, আবছার কামাল সিকদার, জহির উদ্দীন সিকদার, কক্সবাজার জেলা তাঁতীলীগের সহ সভাপতি মোস্তাক আহমদ, রামু উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নুরুল আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম সাগর, রামু উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক তসলিম উদ্দিন সোহেল প্রমুখ।