বাংলাধারা প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন এনায়েত হোসেন নয়ন। তবে স্থানীয় বালু খেকো এবং মাদক ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়ে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিয়মিত পথ চলতে হচ্ছে বলে জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
মিরসরাই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন করেরহাট। ভৌগলিক কারণে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন হওয়ায় ভারত থেকে খুব সহজে অবৈধ শাড়িসহ মাদকের চালান বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে এই করেরহাট দিয়ে। এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত স্থানীয় মাদকের বিশাল এক সিন্ডিকেট। যেখানে নাম উঠে এসেছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম যারা মাদক কারবারি, ভূমি দখল ও অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যস্ত এবং ১৫ বছর ধরে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। মূলত এসব কর্মকাণ্ডে বাঁধা প্রদান করায় ইউপি চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়নের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে চক্রটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, করেররহাট ইউনিয়নে একটি চক্র রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনসহ, ফিন্সিডল কারবারি ও ভূমি দখলের সাথে সম্পৃক্ত। এই চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে মূলত তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।

করেরহাট ইউনিয়নের যুব রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত একজন জানান, করেরহাট বাজারের একটি পক্ষ সবসময় কিশোর গ্যাং’কে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়াত। এদের বেশির ভাগই মাদক সেবন এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। চেয়ারম্যান এসব কাজে বাঁধা দেয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নোংরা খেলায় মত্ত হয়েছে তারা।
২০১৬ সালে সর্বপ্রথম করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এনায়েত হোসেন নয়ন। বর্তমানে পালন করছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়কের দায়িত্ব। প্রথম মেয়াদে করেরহাট ইউনিয়নে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পাহাড়ি অঞ্চলে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ভূমিকা রাখায় এবং ইউনিয়ন পরিষদের সেবাকে জনগনের কাছে সহজীকরণ করাসহ করোনাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার ফলে দ্বিতীয় মেয়াদে দল আবারো দল থেকে নৌকার নমিনেশনে পেয়ে আবারো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এনায়েত হোসেন নয়ন।সামাজিক উন্নয়নসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখায় শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আবারো ষড়যন্ত্রের রোষানলের মুখে এনায়েত হোসেন নয়নকে। করেরহাটের সীমান্ত অঞ্চলে মাদকের চোরাচালান বন্ধ করতে সচেষ্ট থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে উঠে স্থানীয় মাদক সিন্ডিকেট। মূলত দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া ও জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করে প্রতিপক্ষরা। যার ফলে বর্তমানে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অবদানে রাখার কথা জানান এই জনপ্রতিনিধি।
শুধু তাই নয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং তার ছেলে মাহবুব রহমান রুহেলের আস্থাভাজন হওায়ার কারণেও অনেক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতিনিয়ত প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন বলে জানান স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা।

এনায়েত হোসেন নয়ন মিরসরাই উপজেলা অন্যতম সক্রিয় চেয়ারম্যান। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মূলত বিগত ২ মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদকসহ আরো বিভিন্ন অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে সরাসরি বাঁধা প্রদানে কারণে অনেকের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি।এছাড়া প্রতিনিয়ত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এই চেয়ারম্যানের ছবি দেখা যায় প্রতিনিয়ত। মিরসরাইয়ের সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত এই চেয়ারম্যান। প্রতি মাসে নিজ এলাকায় অন্তত চার থেকে পাঁচটি জনসেচতনতামূলক সমাবেশ করে থাকেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রুপকল্প স্মার্ট বাংলাদেশ বিনিমার্ণে তৃণমূল পর্যায় থেকে স্মার্ট হওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এনায়তে হোসেন নয়ন। নিজ ইউনিয়ন পরিষদসহ পুরো এলাকায় ডিজিটাল সেবা চালু করেছেন বহু আগে থেকেই। তবে নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্মার্ট ইউনিয়ন গড়ার ঘোষণা দেন এই জনপ্রতিনিধি। ইউনিয়ন পরিষদের সেবার মাত্রা যুক্ত করবেন স্মার্ট বাংলার রূপকল্প— এমনটাই জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
হাবিলদার বাসা এলাকার ছলিম উল্ল্যাহ বলেন, নয়ন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সেবা অনেক সহজতর হয়ে গেছে। আমাদের করেরহাটে রাস্তাঘাটসহ শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

করেরহাটের আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা আব্দুল কালাম জানান, করোনা ভিতর যখন আমাদের কোনো জীবিকা ছিল না তখন নয়ন ভাই নিজে এসে আমাদেরকে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে যেতেন। উনার অবদানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষ সেবা পাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে রাজনীতির মাঠেও বেশ সক্রিয় এনায়েত হোসেন নয়ন। মাত্র মাত্র ১২ বছর বয়সে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় করেরহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯৮৯ এসএসসি পাস করার পর ভর্তি হন চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ। এইচএসসি পাশের পর ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্রলীগের আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অর্নাস মাস্টার্স শেষে ভর্তি হন মিরপুর ল কলেজে। নির্বাচিত হন মিরপুর ল কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি।
পড়াশোনা শেষে আবারো ফিরে আসেন নিজ এলাকায়। তৎকালীন ৪ দলীয় বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে করেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী রাজনীতিতে পদচারণা শুরু হয় এনায়েত হোসেন নয়নের। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। দীর্ঘ দশ বছর পালন করেন এই দায়িত্ব। তারপর ২০১২ সালে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন এই রাজনীতিবিদ।ধীরে ধীর জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মিরসরাই উপজেলার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
সে সুবাধে ২০১৫ সালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেলে ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সে বার ভাইস চেয়ারম্যান













