২৯ অক্টোবর ২০২৫

সন্দ্বীপে বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, স্থানীয়দের ক্ষোভ(ভিডিও)

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি  »

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে চট্টগ্রাম সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উক্ত ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নবনির্মিত বেড়িবাঁধ ছিঁড়ে মুহূর্তেই প্লাবিত হয় ফসলি জমি, পুকুর ও ঘরবাড়ি। তবে এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটলেও কোন প্রানহানির ঘটনা ঘটেনি।

জানা যায়, কয়েক বছর আগে তিন ধাপে পুরো সন্দ্বীপের বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ১৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মাঝে সারিকাইত ইউনিয়নের কাজ পায় ডলি কনস্ট্রাকশন। এক পর্যায়ে এই কনস্ট্রাকশন নানান অজুহাত দেখিয়ে লেজ গুটিয়ে পালায়। যদিও স্থানীয় জনগণ ও ডলি এন্টারপ্রাইজের দাবী কমিশন দিতে চাপ প্রয়োগ করাই তারা একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে অসম্পূর্ণ কাজ রেখে চলে যায়।

ডলির চলে যাওয়ার ছয় মাসেও কোন প্রকার কাজের মুখ দেখেনি ওই এলাকার লোকজন। পরবর্তী পর্যায়ে এই কাজ বিশ্বাস বিল্ডার্সকে স্থানান্তর করলে তারা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যর্থ হয়। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তাদের একজন বলেন, আমরা কাজ পেয়ছি একমাস। একমাসে এর চেয়েও ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। আমাদের আরও সময় দিতে হবে।

দীর্ঘ ১৫০০ মিটার বেড়িবাঁধের ১০০০ মিটারের কাজ করার কথা বিশ্বাস বিল্ডার্সের থাকলেও বাকি ৫০০ মিটার ছিলো অন্য একটা কনস্ট্রাকশনের। অজানা কারণে তারা ঐ ৫০০ মিটারের কাজ না করলে তার দায়ভার এসে পরে বিশ্বাস বিল্ডার্সের উপর।

স্থানীয় ছাত্র আহমেদ সারজিল জানান, এই স্বল্প সময়ে জোয়ারের পানি থেকে আমাদের রক্ষা করতে বিশ্বাস বিল্ডার্স যতটুকু কাজ করেছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমরা এমন সিজনাল বাঁধ চাই না, আমাদের টেকসই বাঁধের প্রয়োজন।

এছাড়াও স্থানীয় জেলে উজ্জ্বল জলদাশ জানান, বেড়িবাঁধ করতে বিলম্ব হওয়ার গাফলতিতে আজকের এই দুর্দশা। কে বা কারা চাঁদা নেয়, তাদের জন্য আমাদের এই ভোগান্তি মেনে নিতে পারিনা। এসময় তিনি স্থানীয় অনেক জনগণ উপজেলা, জেলা কর্মকর্তা ও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জানতে সারিকাইত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলাধারাকে বলেন, কিছুদিন আগেই আমরা আমাদের সাধ্যমতো বেড়িবাঁধ দিয়েছিলাম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে তা ভেঙ্গে গেল। তবে যেসব এলাকায় পানি প্লাবিত হয়েছে সেখানে কোন বসতি নেই।

বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য যে ১৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তা পুরো সন্দ্বীপের জন্য। আমার এলাকার জন্য বরাদ্দ ছিলো প্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো। সেই বরাদ্দ অনুযায়ী ডলি এন্টারপ্রাইজ কাজ করে। কিন্তু কাজ সম্পূর্ণ করার আগেই তারা চলে যায়। এতে করে বেড়িবাঁধ যতটুকু টেকসই হওয়ার কথা তা হয়নি।

ডলি এন্টারপ্রাইজ কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির তা এড়িয়ে যান।

এক ফোনালাপে উপজেলা কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, বাঁধের অবস্থা পর্যাবেক্ষণ করে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছি। অতিদ্রুত তারা এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন