ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানোর ১২ দিন পর এবার উল্টো ২৭ জন সাংবাদিকসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম। চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে মঙ্গলবার (১৩ মে) মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী এ এস এম নূরে খোদা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বাদী অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম মামলার এজাহারে দাবি করেন, ১ মে সকালে কয়েকজন সাংবাদিক তাকে মারধর করেন, তার মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেন এবং ককটেল বিস্ফোরণ করে আহত করেন। এমনকি তাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তবে ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এর সম্পূর্ণ বিপরীত বিবরণ দিয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক নেতা এবং বর্তমানে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চট্টগ্রামের সদস্য রেজাউল ইসলাম ৩০ এপ্রিল নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন, যেখানে ১ মে সাংবাদিকদের মিলনমেলা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
পরদিন মহান মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের আয়োজনে আনোয়ারার পারকি সমুদ্রসৈকতে মিলনমেলা অনুষ্ঠানের দিন সকালে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ গেট এলাকায় সাংবাদিকদের বহনকারী বাসগুলোর চালকদের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেন রেজাউল ও তার অনুসারীরা। এর প্রতিবাদ করায় তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান।
এই ঘটনায় ডেইলি লাইফ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক প্রদীপ কুমার শীল, যায়যায়দিনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান খোরশেদুল আলম শামীম ও দৈনিক পূর্বদেশের সাব-এডিটর শফিকুল ইসলাম খান আহত হন। স্থানীয়রা সন্ত্রাসীদের কবল থেকে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন এবং রেজাউলসহ শহীদ ওরফে কোরবান আলীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
সাংবাদিক নেতাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা
চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো এই মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট বলে আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, “যেখানে সাংবাদিকরা হামলার শিকার হয়েছেন, সেখানে উল্টো তাদেরই বিরুদ্ধে মামলা দায়ের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।”
এছাড়াও নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নেতারা অভিযোগ করেছেন, ঘটনাটির প্রকৃত বিবরণ ধামাচাপা দিতে এবং সাংবাদিকদের ভয়ভীতির মধ্যে রাখতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা করা হয়েছে।
এআরই/বাংলাধারা