২৪ অক্টোবর ২০২৫

সাঙ্গুর জলে ভাসলো বৈসাবির ফুল

বান্দরবান প্রতিনিধি »

পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’ শুরু হয়েছে জলে ফুল ভাসিয়ে। বুধবার (১২ এপ্রিল) ভোরে বিজু উপলক্ষে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরে সমাবেত হন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগাষ্ঠীরা। নিজেদের সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী পােশাকে দলবেঁধে কলা পাতায় বিভিন্ন প্রজাতির ফুল সাজিয়ে নদীতে ভাসিয়ে সর্বস্তরের মানুষের বিজুর (বৈসাবি) শুভেচ্ছা জানান।

এসময় সকল রােগ মুক্তির ও আপদ বিপদ এবং সকল প্রাণীর হিতসুখ মঙ্গলময় কামনা করেন। পাশাপাশি পুরোনাে বছরকে ত্যাগ করে নতুন বছরকে বরণ করে নেন বুদ্ধ সম্প্রদায়ের এই জনগাষ্ঠীরা।

চাকমা সম্প্রদায়ের মতে, আবহমানকাল ধরে চৈত্র মাসের শেষ দিনে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীরা বিজু উৎসব পালন করে আসছে। সে বিজু উৎসবের উদ্দীপনার আনন্দের মাঝে ঘরে পাচন, জগরাসহ বিভিন্ন তরকারি তৈরি করা হয় প্রতিটি বাড়িতে। চাকমা ভাষায় এটিকে বলা হয় ‌‘বিজু বরান’।

এইদিনে যুবক-যুবতীসহ সপরিবারে গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে নিমন্ত্রণ খেতে যান। তবে চাকমাদের খাবারের মূল আকর্ষণ হলাে পাচন তরকারি। শত প্রকার সবজি, মাছ, শুঁটকি দিয়ে তৈরি করা হয় পাচন তরকারি। প্রতিটি বাড়ীতে পাচন নামের খাবার রান্না করে বাড়িতে আসা অতিথির মাঝে পরিবশন করা হয়।

সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসতে আসা পুণ্যার্থীরা জানান, সবাই যেন সুখে শান্তিতে থাকে এ জন্য আমরা নদীতে ফুল ভাসাই। এ দিনটা আমাদের জন্য খুবই খুশির দিন। ফুল ভাসিয়ে সমস্ত পুরানাে দিনগুলােকে মুছে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছি।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান তিনটি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি। উৎসবটি ত্রিপুরাদের কাছে বৈসু, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে বিজু নামে পরিচিত। এই তিনটি উৎসবের প্রথম অক্ষর নিয়ে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিবছর এটি ‘বৈসাবি’ উৎসব নামে পালন করা হয়।

আরও পড়ুন