২৪ অক্টোবর ২০২৫

সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিয়ে বিপাকে নারী, থানায় মামলা

চট্টগ্রামে এক নারী আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) আরিফ হোসেন জানান, মামলার বাদী নিজেকে নগরের গোলপাহাড় এলাকার একটি বিউটি পার্লার ও বুটিক শপের মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তার অভিযোগ, তিনি পুলিশের সহায়তায় ছোট সাজ্জাদকে ধরতে ভূমিকা রাখেন, এরপর থেকেই হুমকির মুখে পড়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে ছোট সাজ্জাদকে ধরতে সহায়তা করেছিলেন ওই নারী। এরপর ১৭ মার্চ সাজ্জাদ ভারতীয় একটি নম্বর থেকে ফোন করে তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন না বলে হুমকি দেন। পরদিন অন্যান্য আসামিরা তার কাছে গিয়ে আবারও এক কোটি টাকা দাবি করেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন।

ছোট সাজ্জাদ পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং ৮ ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি। তার পাশাপাশি মামলার আসামিদের তালিকায় রয়েছে সাজ্জাদ খান, হাবিব খান, রায়হান, হেলাল, হাসান, আরমান ওরফে ডবল হাজারি, ইমন, বোরহান, রাজু, মোহাম্মদ ও দিদার।

২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া এলাকায় তাহসিন নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তার বাবার দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ছোট সাজ্জাদকে। এর আগে অনন্যা আবাসিক এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনাতেও তার নাম আসে।

হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জামালের ছেলে সাজ্জাদকে নগরের বায়েজিদ, অক্সিজেন ও চান্দগাঁও এলাকায় ‘ছোট সাজ্জাদ’ বা ‘বুড়ির নাতি’ নামে চেনে স্থানীয়রা। দুই যুগ আগে শাহ আমানত সেতুর সংযোগ সড়কে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাইক্রোবাস আটকে গুলি চালিয়ে ৮ জনকে হত্যার ঘটনায় বড় সাজ্জাদ প্রধান আসামি ছিলেন, যিনি নগরে প্রভাবশালী অপরাধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার অনুসারী হিসেবে ছোট সাজ্জাদ চান্দগাঁও ও বায়েজিদ এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

৪ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশের অভিযানে ছোট সাজ্জাদ গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান, এতে দুইজন সাধারণ মানুষ আহত হন। আত্মগোপনে থেকে ২৮ জানুয়ারি ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে হুমকি দেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সাজ্জাদের সন্ধানে ‘উপযুক্ত’ পুরস্কার ঘোষণা করে।

১৫ মার্চ রাতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। পরদিন সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে তিনি সাজ্জাদকে জামিনে বের করে আনার ঘোষণা দেন এবং প্রতিপক্ষকে হুমকি দেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, এখন তোমাদের পালানোর পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে, তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করেছ তোমরা, শেষ করব আমরা।

আরও পড়ুন