গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার বিচার দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রায় বেলা ১২ থেকে শুরু হয়ে অনশন কর্মসূচি চলে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুকি আজম ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবঃ মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী’র আশ্বাসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে অনশন ভাঙেন আন্দোলনকারীরা।
অনশন শুরুর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশের একপর্যায়ে বক্তব্য দেন রাসেল। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও তাঁদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের লোকজনের বিচারে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ তাঁরা দেখেননি। হামলা ও হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ সবার বিচার করতে হবে। বিচারের দাবিতে তিনি অনশনে বসছেন।
সন্ধ্যার ছয়টার পর সড়কে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী শুয়ে পড়েন। এরপর অনশনের স্থলে আসেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। রাসেলসহ অন্যদের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এর পরও তাঁরা আশ্বস্ত না হলে জেলা প্রশাসকের মুঠোফোন থেকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে কথা বলেন রাসেল। উপদেষ্টার আশ্বাসেও অনশন ভাঙেননি তাঁরা।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেখানে আসেন প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা। এবার মুঠোফোনে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। দীর্ঘক্ষণ কথা বলে তিনিও চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার। তবে নিজেদের সিদ্ধান্তের অটল রইলেন শিক্ষার্থীরা। জেলা প্রশাসক আরেক দফা আশ্বস্ত করলেন তাঁদের।
রাত নয়টার দিকে জুস হাতে আরেক দফা শিক্ষার্থীদের দিকে এগিয়ে যান জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। তাঁদের আশ্বস্ত করার পর এবার অনশন ভাঙলেন রাসেলসহ অন্যান্য অনশনকারীরা। তবে এ সময় তাঁদের দাবি আদায়ে তিন দিনের সময় বেঁধে দিলেন রাসেল আহমেদ। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে সড়কেই বসে ছিলেন তাঁরা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে সড়কেই বসে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন, আমরা সেটি মেনে নিয়েছি।’