বাংলাধারা ডেস্ক »
নগরের পতেঙ্গায় পরকীয়া প্রেমিক সন্দেহে আবু তাহের নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িত আবদুল জলিলকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবদুল জলিল তার তালাক দেওয়া স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সন্দেহে আরও দুইজনকে নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে নোয়াখালী জেলার কিল্লার হাটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আব্দুল জলিলের বাড়ি পঞ্চগড় জেলায়।
এদিকে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে আবু তাহের (৪৮) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি নগরের পতেঙ্গা থানার স্টিলমিল নুরনবীর গলিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও বাড়ি রাঙামাটি জেলায়। তিনি কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি গার্মেন্টে সিকিউরিটি সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী রওশন আরা সন্তানদের নিয়ে পতেঙ্গায় আবু তাহেরের বাসার একই কলোনিতে থাকেন।
পুলিশ জানায়, নিহত আবু তাহের ও রওশন আরা ছেলেসহ স্টিলমিল নুরনবীর গলিতে একই ভবনে বসবাস করেন। রওশন আরার ডিভোর্স দেওয়া স্বামী আব্দুল জলিল (৪০)। তিনি নোয়াখালীতে থেকে ভ্রাম্যমাণ মুড়ি-চানাচুর বিক্রি করেন। রওশন আরা আবু তাহেরকে ভাই বলে সম্বোধন করতেন। আবু তাহেরও ছোট বোনের মত রওশন আরাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতেন। স্ত্রী রওশনের সঙ্গে তার মাসখানেক আগে তালাক হয়।
জলিল সন্দেহ করতেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে পাশের বাসার আবু তাহেরের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে। তবে কিছুদিন ধরে জলিল আবারও সংসার করতে চেয়ে রওশনকে অনুরোধ করতে থাকেন। গত ৯ ডিসেম্বর জলিল পতেঙ্গায় রওশনের এক মামীর বাসায় ওঠেন। ১৪ ডিসেম্বর রওশনের বাসায় যান। পরদিন সকালে জলিল বাসা থেকে বের হওয়ার পর রওশন তার ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে আব্দুল জলিল বাসায় ফিরে রওশন আরাকে না পেয়ে আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসা করে। জলিল ধারণা করেন, রওশন আরা ও তার ছেলেকে আবু তাহের লুকিয়ে রেখেছেন।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জলিল রওশনের মামাতো ভাই ও মামাতো বোনের স্বামীকে নিয়ে তাহেরকে ডেকে বাসার নিচে নিয়ে যায়। রওশন কোথায়- সেটা জানতে চেয়ে তাহেরকে তিনজন মিলে মারধর শুরু করে। আবু তাহেরকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে আহত করলে স্থানীয়রা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, আবু তাহেরের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আব্দুল জলিল পালিয়ে যায়। ঘটনার পর আবু তাহেরের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পতেঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নোয়াখালীর কিল্লার হাট এলাকা থেকে আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।













