২৪ অক্টোবর ২০২৫

সামরিক বাহিনীতে শৃঙ্খলা আনার নামে ক্যান্টনমেন্টগুলো রক্ত দিয়ে রাঙিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান

সৈকত জোহা »

আজ ৩০ মে রোববার বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান এর মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর একটি দলের হাতে প্রাণ হারান তিনি।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হন জেনারেল জিয়াউর রহমান। আর ৭ নভেম্বর কর্নেল তাহেরের বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার মাধ্যমে ক্ষমতার দৃশ্যপটে হাজির হন জিয়াউর রহমান।

জিয়া মূলত সেনাবাহিনীর উপর ভর করে ক্ষমতায় ছিলেন। আর একসময়ের বিশ্বস্ত সঙ্গী জেনারেল আবুল মনজুরের হাতেই প্রাণ হারান।

জিয়ার আমলে সামরিক বাহিনীতে ছোট-বড় ২১টি ক্যু হয়। প্রায় সবগুলোই তিনি অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করেন। সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা আনার নামে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই অনেক সাধারণ সৈনিকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

সামরিক বাহিনীতে সবেচেয়ে বেশি সচেতন ছিলেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা । ১৯৭৭ সালে জিয়ার প্রহসনের হ্যাঁ/না ভোটের সময় বিমানবাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি না ভোট দিয়েছিলেন।

বেশিরভাগ অভ্যুত্থানের পর সামরিক বিশেষ আদালত গঠন করা হত। আবার কনেক ক্ষেত্রে আদালত গঠনের আগেই নিজেদের মর্জিমত শাস্তি প্রদান করা হত। আপিলের কোন সুযোগ পেতেন না অভিযুক্তরা ।

১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিদ্রোহ করেন। বিদ্রোহে বিমানবাহিনীর অনেক অফিসার মারা গেলেও তৎকালীন বিমানবাহিনী প্রধান এ জি মাহমুদ প্রাণে বেঁচে যান। জিয়া তখন তাঁকেও সন্দেহ করা শুরু করেন। যতক্ষণ পর্যন্ত ওরা না মরে ততক্ষণ পর্যন্ত ওদের গলায় ফাঁসি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

এই অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সন্দেহে প্রায় ১১৪৩ (সরকারি তালিকা) জনকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া বহু সৈনিককে নানা দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হতো অভিযুক্তদের কোন প্রকার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই।

নামের ভুলের কারণেও অনেককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। আসামি এয়ারফোর্সের হলেও নামের মিল থাকার কারণে সেনাসদস্যকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

জিয়ার সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অভ্যুত্থানে প্রায় ৩০০০ জনের বেশি সামরিক বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করা হয় বিচারের নামে। এইসব সৈনিকের বেশিরভাগকে দাফন করা হয় রাজশাহীর বিভিন্ন কবরস্থানে। অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি ।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই নিয়ে কথা বললেও জিয়া তাতে কর্ণপাত করেননি ।

বাংলাধারা/এআই

আরও পড়ুন