৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সার কারখানার বিষাক্ত পানি খেয়ে ১২ মহিষের মৃত্যু, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

আনোয়ারা প্রতিনিধি  »

আনোয়ারার রাঙ্গাদিয়া এলাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ব সার কারখনা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (সিইউএফএল) ছেড়ে দেয়া বর্জ্য মিশ্রিত বিষাক্ত পানি খেয়ে ১২ মহিষের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(৬ মে) সকাল নয়টায় বারশত ইউনিয়নের গোবাদিয়া খালে এ ঘটনা ঘটে। বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

এর আগেও বেশ কয়েকবার এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে। বারবার বিষাক্ত পানি খেয়ে গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটনা ঘটলেও সেটিকে তেমন গুরুত্বই দিচ্ছেনা সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ। কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খালে ছেড়ে দেয়ার কারণে বার বার এই ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া সিইউএফএলের ছেড়ে দেয়া বিষাক্ত পানির কারণে আশপাশের মাছের ঘেরগুলোর মাছ মরে যাওয়ারও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ঘেরের মালিকরা। বিষাক্ত পানির কারণে বর্তমানে সিইউএফএলের আশপাশের ঘেরগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সিইউএফএলের পাশে বসুন্ধরা চর এলাকায় স্থানীয় লোকজনদের পালন করা মহিষগুলো চড়ে। গবাদি পশুগুলো পিপাসার্ত হলে পাশের গোবাদিয়া খাল থেকে পানি পান করে।

আজ প্রতিদিনের মত গোবাদিয়া খালে পানি খেয়ে স্থানীয় মো. এরফানের ৩টি,আনোয়ার হোসেনের ২ টি, আব্দুল মালেকের ৩টি, ইব্রাহিমের ২টি, ইউনুছের ২টিসহ মোট ১২ টি মহিষ মারা যায়। এগুলো ছাড়া আরো ৪-৫ টি মহিষ বিষাক্ত পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সবমিলিয়ে স্থানীয় লোকজনের প্রায় ১৪ লাখ টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

মৃত মহিষগুলো খালের পাড়েই পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে মহিষের মালিকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এসময় পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিইউএফএলের বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খালে ছেড়ে দেয়ায় বার বার এই ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন মহিষের মালিকরা।

মহিষের মালিক মো. এরফান বলেন, প্রতিদিনের মত আমাদের মহিষগুলো বসুন্ধরা বিলে চরতে যায়। সেখান থেকে গোবাদিয়া খালের পানি পান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মহিষগুলো খালের পাড়ে মরে পড়ে থাকে। বার বার সিইউএফএলের খামখেয়ালির কারণে আমাদের মহিষগুলো মারা যায়। আমরা এ ধরণের ঘটনা আর যাতে না ঘটে তার একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই।

বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, গোবাদিয়া খালে সিইউএফএল থেকে আসা বিষাক্ত পানি খেয়ে ১২ মহিষ মারা যাওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করি। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে সিইউএফএলের প্রতি প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার অহ্বান জানাই।

এ বিষয়ে জানতে সিইউএফএলের এম ডি আব্দুর রহিমের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন