দীর্ঘ ছয় মাস বন্ধ থাকার পর বহুল আলোচিত রাষ্ট্রায়ত্ত চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) মাত্র ১২ ঘণ্টা উৎপাদন চালু রাখতে পারল না।
শনিবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বহু প্রতীক্ষার পর কারখানার উৎপাদন শুরু হলেও রবিবার বিকেল সোয়া ৩টার মধ্যেই সেটি আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, যান্ত্রিক সমস্যার কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আমি বর্তমানে প্লান্টে আছি, পরে বিস্তারিত জানাব।
প্রায় সাত মাস ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় ১১ এপ্রিল থেকে অচল হয়ে পড়েছিল দেশের অন্যতম বৃহৎ সার কারখানাটি। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও গত ১৯ অক্টোবর গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হয়, এবং সপ্তাহখানেক যান্ত্রিক প্রস্তুতির পর শনিবার রাতে উৎপাদন শুরু করে সিইউএফএল। কিন্তু ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই আবার থেমে যায় সেই উৎপাদন।
কেজিডিসিএলের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী শফিউল আজম খান বলেন, আমরা গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো বাধা দিইনি। সরকারিভাবে কারখানা চালু বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়, যা চাহিদার ওপর নির্ভর করে।
সিইউএফএল সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য কারখানাটিতে দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। গ্যাস সংকট ও যান্ত্রিক জটিলতায় গত অর্থবছরে কারখানাটির উৎপাদন নেমে আসে মাত্র আড়াই লাখ মেট্রিক টনে।
বাংলাদেশে বছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা মিলে উৎপাদন হয় প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন, বাকি ১৬ লাখ টন আসে আমদানির মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, জাপানের কারিগরি সহায়তায় ১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় সিইউএফএল। চালুর সময় দৈনিক উৎপাদনক্ষমতা ছিল ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন, বর্তমানে তা নেমে এসেছে প্রায় ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টনে।
দেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির জন্য এই কারখানার পুনরায় বন্ধ হয়ে পড়া এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা।













