ফেরদৌস শিপন »
‘সিত্রাং’র চোখ রাঙানিতে কখনো হালকা, কখনো মুষলধারে বৃষ্টি। হেমন্তের এই ঋতুতে হঠাৎ বৃষ্টি নাগরিক জীবনে একটু স্বস্তি আনলেও দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটির নাম ‘সিত্রাং’। নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া।
সোমবার সকাল থেকেই শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা। খুব কমসংখ্যক যানবাহন চলাচল করছে। এই সময়ে উত্তাল সাগর ও টানা বৃষ্টিতে জনজীবন থমকে গেছে। নাগরিক জীবনে দুর্ভোগ হলো জলাবদ্ধতা, বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়া। বর্জ্যের স্তুপ জমে ওঠা।
এদিকে উপকূল এলাকার জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত। সেখানকার ঘরবাড়ি, ফল-ফসল ও মাছের ঘের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে খাদ্য ও নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
এর আগে দেশে বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়ের আগে-পরে উপকূলে এই অবস্থা সবসময়ই দেখা যায়। বিশেষ করে ইয়াস-আইলা-সিডর-নার্গিসের পরে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নির্মিত বেড়িবাঁধগুলো অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। সেসব বাঁধের উচ্চতা এতো কম যে, বছরে একাধিকবার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাঁধগুলো তলিয়ে যায়। এর ফলে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সৃষ্টি ও ব্যাপক ফসলহানি হয়।
দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্তমানে বিশ্বে ‘রোল মডেল’ বলে সরকার দাবি করে এসেছে বিভিন্ন সময়ে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সফল ইতিহাসও রয়েছে, তারপরেও বিগত বছরগুলোতে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের অপ্রস্তুত পরিস্থিতির নগ্নচিত্র প্রকাশিত হয়েছে!
আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে অতি বৃষ্টিজনিত সমস্যার সমাধান করবে। নাগরিক সেবা অব্যাহত রেখে গ্রামীণ জনপদে বৃষ্টিজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গতি আনতে হবে আমাদের মত দুর্যোগপ্রবণ দেশে। প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাঘবে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। আপদকালীন সময়ে মানুষের প্রতি মানবিক হবার শিক্ষা আমাদের নিতে হবে। বাড়িয়ে দিতে হবে সাহায্যের হাত।
লেখক : সম্পাদক, বাংলাধারা।













