২৪ অক্টোবর ২০২৫

সীতাকুণ্ডে একের পর এক ছিনতাই, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ব্যবসায়ীরা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি »

চট্টগ্রাম প্রবেশমুখ সীতাকুণ্ডের বার আউলিয়া সংবাদপত্রের এজেন্টের মালিক এস.এম. ইয়াসিনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত না হতেই তার বাড়ির সামনেই এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি পে-অর্ডার ও নগদ ১২ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়েছে ছিনতাইকারীর দল।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি বার-আউলিয়া সাগর উপকূল এলাকার শিপইয়ার্ড সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত রোববার ভোর সকালের দিকে একই স্থানে একটি সাদা মাইক্রোবাসে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডিবি কোট পরেই হ্যন্ডকাপ পরিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় স্থানীয় সংবাদপত্র এজেন্ট এস এম ইয়াসিনকে। সোমবার রাতে চান্দিনা মাধাইয়া এলাকার একটি বাজারের পাশে অপহরণকারীরা নির্জন স্থান থেকে একটি প্রাইভেটকারে এনে নামিয়ে দেয়। এরপর উনি নিজেই এক গণপরিবহন গাড়িতে করে চান্দিনা থানা পুলিশের কাছে আশ্রয় নেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকার বাসিন্দা স্ক্র্যাপ লোহা ব্যবসায়ী নেছার আহমেদ বিভিন্ন অটো রি-রোলিং মিলে জাহাজভাঙা ইয়ার্ড থেকে স্ক্র্যাপ লোহা কিনে বিএসআরএম ও সীমা অটো রি-রোলিং মিলসহ বিভিন্ন রি রোলিং মিলে সরবরাহ করে আসছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে ন্যাশনাল ব্যাংক ভাটিয়ারী শাখা থেকে ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার একটি পে-অর্ডার ও নগদ ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা নিয়ে পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন বার-আউলিয়া সাগর উপকূল এলাকার একটি ইয়ার্ড থেকে স্ক্র্যাপ লোহা ডেলিভারির জন্য যাচ্ছিলেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের পর ইয়ার্ডের সড়কে প্রবেশ করলে বার-আউলিয়া সাবেক বার-আউলিয়া হাইওয়ে থানা এলাকার কিছু পশ্চিমে দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে চারজন ছিনতাইকারী তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ও পে অর্ডারসহ সাড়ে ১২ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীর চিৎকার শুনে আশে-পাশে লোকজন এগিয়ে তাকে উদ্ধার করে আত্মীয়-স্বজনকে খবর দেন।

ব্যবসায়ী নেছার আহমেদ বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ভাটিয়ারী থেকে একটি গণপরিবহণে বার আউলিয়া এলাকায় ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ লোহা ডেলিভারির জন্য যাচ্ছিলাম। মহাসড়কের বার-আউলিয়া এলাকায় গণ-পরিবহণ থেকে নেমে হেঁটে সাগর উপকূলে অবস্থিত ইয়ার্ডে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে টাকাগুলোসহ মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিক আমার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবগত করেছি।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ পেয়ে আমরা ব্যবসায়ীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করছি। মহাসড়ক থেকে সাগর উপকূল ইয়ার্ড প্রায় এক কিলোমিটার, আর উনি বয়স্ক লোক, এই পথে নগদ টাকা নিয়ে যাচ্ছে হেঁটে। ইতোমধ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম ছিনতাইকারীদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের বিভিন্নস্থানে লরি ও ট্রাক থেকে স্ক্র্যাপ লোহা ছিনতাই ও চুরি ঘটনায় পুলিশ বিপুল পরিমাণ স্ক্র্যাপ লোহা ভাটিয়ারী ইমামনগর এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের সময় লোহা চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত জাহেদ হোসেন বাল্লা ও সুমন নামে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করলেও অভিযুক্ত ও একাধিক ঘটনার সাথে জড়িত মহাসড়কের স্ক্র্যাপ লোহা চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের মূল হোতা মিনাইয়্যাকে এখনো পুলিশ ধরতে পারেনি। চোখ ফাঁকি দিয়ে সে তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

মহাসড়কে মাইক্রোযোগে একদল ছিনতাইকারী, অপহরণ, যাত্রী হিসেবে তুলে নির্জন স্হানে নিয়ে সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল, মালামাল নিয়ে মহাসড়কের পাশে ফেলে দেয়, অনেককে জিম্মিকরে মুক্তিপন আদায় করে আসছে। মাঝেমধ্যে দুয়েকজন ধরা পড়লেও ছিনতাই প্রতিরোধে জোড়ালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন