বোয়ালখালী প্রতিনিধি »
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষক আবদুর রশিদ, মো. শরীফ ও মোহাম্মদ মোনাফ। বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে গত জানুয়ারি মাসে প্রণোদনা হিসেবে ২ কেজি সূর্যমুখীর বীজ ও ১০ কেজি করে ইউরিয়া, টিএসপি এমওপি সার পান এই তিন কৃষক। তারা নিজেদের ৩২ শতক জমিতে এ বীজ বপন করেন। এতে নিজেদের পরিশ্রম ছাড়া খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এখন প্রতিটি বীজে এক একটি চারা ও প্রতিটি চারায় এক একটি ফুলে রূপান্তরিত হয়েছে। এ ফুল দেখতে অনেকই ভীড় জমাচ্ছেন বাগানে, ছবি তুলে পোস্ট দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মৌমাছি-প্রজাপতির উড়াউড়িও মন কাড়ছে দর্শনাথীদের।
রোববার (২০ মার্চ) সরেজমিনে দেখা গেছে, সূর্যমুখী বাগানের প্রায়ই গাছে হলুদ ফুল মুখ মেলেছে। বাকিগুলো এখনো সবুজ কলি।
কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, ‘বাগান তো করেছি। তবে কি পরিমাণ লাভ হবে বা তেল উৎপাদন করা যাবে তা জানি না। তবে এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ‘আসলে এটি কোনো প্রদর্শনী বাগান নয়। প্রণোদনা হিসেবে বীজ দেওয়া হয়েছিল কৃষকদের। কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে এ বাগান করতে আগ্রহী হয়েছেন। আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছি। তারা যাতে লাভবান হন সে ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পুষ্টিগুণে সূর্যমুখী বীজের তেল অনন্য। সরিষা ও সূর্যমুখীর ব্যাপকভাবে চাষ হলে দেশে তেলের ঘাটতি থাকবে না।’

আরডিএস হাইব্রিড সূর্যমুখীর জাতের বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুল আলমপুর। তিনি বলেন, ‘সূর্যের মত দেখতে এ ফুল সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলেই এর নাম সূর্যমুখী।’
এ কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, ‘সূর্যমুখী গাছ ৩ মিটার দীর্ঘ হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এর বীজ হাঁস-মুরগির খাদ্য ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যমুখীর তেল ঘি-এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেলে অন্যান্য ভোজ্য তেলের চেয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম হওয়ায় হৃদরোগীদের জন্য বেশ ভালো। এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।’
কৃষক মো. শরীফ ও মোহাম্মদ মোনাফ জানান, মূলত ধান চাষ করেন তারা। অনেকটা কৌতুহল বশত প্রথম বারের মতো কৃষি অফিসের পরামর্শে এর চাষ করেছেন। বাগান দেখেই তাদের মনতৃপ্ত।













