বাংলাধারা ডেস্ক »
সূর্যের আলো ও পানি দিয়ে তৈরি গ্যাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে চুলা। এই উদ্ভাবন গবেষক আব্দুল হামিদের। প্রায় ১০ বছরের প্রচেষ্টায় সফল হয়েছেন মাত্র দশম শ্রেণীর গণ্ডী পেড়ানো এই গবেষক। তার চাওয়া গ্যাসের জন্য তিতাস বা এলপিজির দিকে তাকিয়ে না থেকে বিকল্প জ্বালানির প্রসার হোক সারা দেশে।
খুলনার কয়রায় জন্ম নেওয়া আব্দুল হামিদ পড়েছেন স্থানীয় একটি স্কুলে। টাকার অভাবে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে একটা সময় ঢাকায় এসে চাকরি নেন, একটি সোলার বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানে। এর পরের গল্পটা শুধুই এগিয়ে যাওয়ার।
আব্দুল হামিদ বলেন, বইতে পড়েছিলাম হাইড্রোজেন নিজে জ্বলে এবং অক্সিজেন অপরকে জ্বালাতে সাহায্য করে, আর পানির ভেতর হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন থাকে। তখন থেকে ধারণা হয়েছিল যে হাইড্রোজেন যেহেতু নিজে জ্বলে, এটা দিয়ে রান্না করা যায় কি করে। তখন চিন্তা হয় পানিতে তো আগুন দিলে জ্বলার কথা কিন্তু আগুন জ্বলে না কেন? এরপর এই কারণটা আগে খুঁজে বের করি। যেহেতু সূর্য সব শক্তির উৎস। সেই সূর্যের কিরণটাকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি। এটাকে স্টোর করে যদি শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারি। দেশের জন্য তাহলে তো ভালো একটা জিনিস হয়।
সেই চিন্তা থেকেই আব্দুল হামিদ একটু একটু করে একটি সোলার প্যানেল, পানি, প্লাস্টিকের বোতল, বালতি আর লোহার ব্যারেল জোড়াতালি দিয়ে উদ্ভাবন করলেন প্রাকৃতিক গ্যাস। সেই গ্যাস থেকে জ্বালানো যাচ্ছে চুলা। রান্না করা যাচ্ছে ইচ্ছে মত কিন্তু প্রশ্ন করা হলো এই গ্যাস সংরক্ষণ করা হয় কিভাবে কতক্ষণই বা থাকে এটা ব্যবহার যোগ্য।
আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রত্যেকদিন ৭০০ লিটার গ্যাস হয় এখান থেকে ৬০০ লিটার ব্যবহার হবে আর ১০০ লিটার স্টোর থাকবে।’
শুধু চুলা নয় বায়োগ্যাস দিয়ে তেল ছাড়াই জেনারেটর চালিয়ে দেশের সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন আব্দুল হামিদ। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় আশ্বাস পেলেও তার গবেষণায় পাশে দাঁড়ায়নি সরকার বা অন্য কেউ। বিকল্প জ্বালানির প্রসারে সরকারি সহায়তা ও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন আব্দুল হামিদ
এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, একটা জায়গা দরকার। ল্যাব দরকার। কিছু অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান দরকার, প্রত্যেক বাড়ির মালিক যদি এই ভাবে গ্যাস উৎপাদন করে তাহলে তো গ্যাসের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। যার ফলে এলপিজি লাগবে বলে প্রয়োজন মনে করি না আমি।
প্রায় দশ বছর ধরে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে এ গবেষণার ফল পেয়েছেন আব্দুল হামিদ। রাজধানীর বারিধারায় একটি বাড়ির ছাদের উপরেই তার গবেষণা চলে দিনভর।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













