কক্সবাজার প্রতিনিধি »
‘আপনাদের সুস্থতাই আমাদের কাম্য’-এ শ্লোগানে পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, আনোয়ারা, কর্ণফুলী, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া ও চন্দনাইশ এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনা প্রতিরোধে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রামুস্থ ১০ পদাতিক ডিভিশন। সচেতনাতামূলক প্রচারণা ছাড়াও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশেষভাবে নির্মিত গাড়ী থেকে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, রাস্তা ও হাসপাতালে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় গিয়ে জেলা প্রশাসন কর্তৃক চিহিৃত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়াও জেলা-উপজেলার সকল মার্কেট, বাসটার্মিনাল, মফস্বলে জরুরি প্রয়োজনে খোলা দোকান, কাঁচাবাজার ও ফার্মেসীতে গিয়ে কতটুকু দূরত্ব বজায় রাখতে হবে তা চিহ্নিত করার কাজে সাধারণ মানুষ অভাবনীয় সাড়া দিয়েছে। সেনা টহল জোরদার থাকায় এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
দেখাযায়, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে সেনাসদস্যরা জেলার প্রত্যেকটি শহর, উপজেলা, গ্রাম, পাড়া-মহল্লা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। বাইরে বিনা প্রয়োজনে চলাচলরতদের বাসায় ফেরত পাঠানো, একজনের বেশি একসঙ্গে চলাচল না করা, রিক্সায় একজনের বেশি না ওঠা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনের তাগিদে চলা গণপরিবহনে প্রতি দুই সিটে একজন বসা বাধ্যতামূলক করেছে। শহরের দোকান-পাট বন্ধ থাকায় এবং যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ার কারণে বদলে গেছে পুরো জেলার সার্বিক দৃশ্যপট।
অপরদিকে, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় ৩৪টি ক্যাম্পে সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। তাদের মাঝে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত জনসচেতনতা তৈরিতে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্প পর্যায়ে রোহিঙ্গা মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক, সহযোগী সংস্থাসমূহের মাধ্যমে বার্মিজ ও ইংরেজী ভাষায় লিফলেট বিতরন করা হয়েছে। পাশাপাশি সকল রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে দিনব্যাপি বার্মিজ ও রোহিঙ্গা ভাষায় সচেতনতামূলক মাইকিং করার কার্যক্রম চলেছে। একই সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে সেনাবাহিনীর নতুন নতুন চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণ ও সকল ধরনের যান চলাচল সীমিত করা হয়। রোহিঙ্গাদের বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করার লক্ষ্যে বেসামরিক প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারের নির্দেশিত লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ টহলদল কাজ করে। বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা এক হয়ে নিরলস কাজ করে চলছে। এছাড়াও প্রশাসন কতৃক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দোকানপাটসহ অপ্রয়োজনীয় জনসমাগমস্থল। সেনাবাহিনীর গৃহীত এ সকল কর্মকান্ডকে আপামর জনসাধারণ সাধুবাদ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করে বিদেশফেরত ও সংশ্লিষ্টদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকা, জনসাধারণদের বাসায় অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী গত বুধবার থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। সেনাবাহিনীর এ সকল কর্মকান্ড জনগণ সাদরে গ্রহণ করেছে। প্রয়োজন ব্যতিত বাইরে খুব কম সংখ্যক লোক রাস্তায় আসছে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













