২৩ অক্টোবর ২০২৫

সোধির কাছেই হারল বাংলাদেশ

বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজে দুই দলের প্রথম ম্যাচটি পন্ড হয় বৃষ্টিতে। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপে ২৫৪ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কিউই স্পিনার সোধির ঘূর্নিতে ১৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। এতে ৮৬ রানের জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের ১-০তে এগিয়ে গেল কিউইরা।

২৫৫ রানের লক্ষ্যে সতর্ক শুরু করেছিল বাংলাদেশ দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। প্রথম পাঁচ ওভারে দুজনই খেলেছেন সতর্কভাবে। তাদের জুটিতেই আসে ১৯ রান। তবে শুরুতে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া লিটন কাজে লাগাতে পারেননি নিজেকে।

ফিরে গেছেন জেমিসনের বলে। তার ডেলিভারিতে টপ এজ হয়ে বল চলে যায় ডিপ থার্ডে। সেটা লুফে নেন রাচিন রবীন্দ্র। ফেরার আগে ১৬ বলে ৬ রান করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জুনিয়র তামিমকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করছে সিনিয়র তামিম। লিটন দাস ফিরে যাওয়ার পর দুই তামিমে রানের চাকা সচল হয় বাংলাদেশের।

তাদের ব্যাটে দ্রুত গতিতে উঠে রান। প্রথম ৫ ওভারে যেখানে ছিল ১৭ রান। পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে দলীয় রান এখন ৫৪। তবে দলীয় ৬০ রানে জুনিয়র তামিম আউট হলে ভাঙে ৪১ রানের জুটি। এরপর তৃতীয় উকেটে নামেন সৌম্য সরকার। তবে ২ বছর পর সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমান করতে ব্যর্থ এই বাঁহাতি ব্যাটার। দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে পথ ধরেন তিনি।

এরপর চতুর্থ উইকেটে নামা তাওহীদ হৃদয়ও নিজের সুবিচার করতে পারলেন না। নিজের নামের পাশে ৪ রান যোগ করেই সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর বাইশ গজে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার সঙ্গে ২২ রানের জুটি গড়েন তামিম। কিন্তু সোধির বলে সুইপ করতে গিয়ে টম ব্লান্ডেলের তালুবন্দী হন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৪৪ রান করেন তিনি।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে কিউই বোলারদের চাপ সামলে শেখ মেহেদীকে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছেন অভিজ্ঞ রিয়াদ। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। তবে দলীয় ১৩৪ রানে মেহেদী আউট হলে টাইগারদের শেষ ভরসাও হারায়। এরপর নাসুমকে নিয়ে হারের ব্যবধান কমিয়ে আনতে থাকে অভিজ্ঞ রিয়াদ।

তবে দলীয় ১৪৯ রানে নিজের ব্যাক্তিগত অর্ধশতকের ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন রিয়াদ। কোল ম্যাকনকির বোলে আউট হবার আগে ৪৯ করেন তিনি। তিনি ফিরে গেলে শেষ পর্যন্ত দুইশর নিচে থেমে যায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ছয় উইকেট নেন সোধি।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু আভাস দেন নিউজিল্যান্ড ব্যাটাররা। ভালো শুরুর পরে দ্রুত উইকেট হারিয়ে দিশেহারা নিউজিল্যান্ড। দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান উইল ইয়াং। এরপর ব্যাটিংয়ে নামে চ্যাড বোয়েস।

তবে দ্রুত উইকেট পড়লেও আক্রমণাত্মক মেজাজেই ব্যাট চালাচ্ছিলেন আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেন। দলীয় ২৬ রানে ১৫ বলে ১২ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন ফিন অ্যালেন। এরপর ব্যাটিংয়ে নামে হেনরি নিকোলস। হেনরি নিকোলসকে নিয়ে শুরুর চাপ সামাল দিতে ব্যর্থ হয় চ্যাড বোয়েস। দলীয় ৩৬ রানে ১৯ বলে ১৪ রান করে অভিষেক হওয়া খালিদ আহমেদের বলে আউট হন।

এরপর হেনরি নিকোলস সঙ্গে নিয়ে পরিস্তিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ক্রিজে আসা টম ব্লান্ডেল। চতুর্থ উইকেটে ১১১ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েন তারা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন টম ব্লান্ডেল। তবে দলীয় ১৩১ রানে ৬১ বলে ৪৯ রান করা নিকোলাসকে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন খালিদ আহমেদ।

পরে পঞ্চম উইকেটে ব্যাট করতে আসা রাচিন রবীন্দ্রও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকেননি। নিজের নামের পাশে ১০ রান যোগ করতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসা কোল ম্যাকনকি নিয়ে ব্যাটিং করতে থাকে টম ব্লান্ডেল। তবে দলীয় ১৬৬ রানে বিপজ্জনক হয়ে উঠা ব্লান্ডেলকে সাজঘরে ফেরান হাসান মাহমুদ। ফেরার আগে ৬৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় তিনি করেছিলেন ৬৮ রান।

সপ্তম উইকেটে দেখা শুনে খেলা কোল ম্যাককোঞ্চিও ইনিংস বড় করতে পারেননি। দলীয় ১৮৭ রানে নাসুমের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ৩৩ বলে ২০ করেন কোল। শেষ দিকে ইশ সোধির ক্যামিও ইনিংসে ভর করে ২৪৭ রানে গুটিয়ে যায় কিউইদের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন খালেদ আহমেদ।

আরও পড়ুন