সন্দ্বীপ প্রতিনিধি »
চলতি বছরের ২০ নভেম্বর বিকেলে পাওয়া যায় কামরুল হাসান সৌরভ’র(২০) লাশ। সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়ন ১ নং ওয়ার্ডস্থ আক্তার হোসেন’র পুকুরের দক্ষিন-পূর্ব কোনে গাছের সাথে হাত পা গলা বাঁধা উলঙ্গ অবস্থায় মেলে সৌরভ’র মৃতদেহ। পরদিন ২১ নভেম্বর সৌরভ’র বড়ভাই মেহেদী হাসান বাদি হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীগণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি-৩০২/৩৪ (মামলা নং-০৭) এজাহার দায়ের করেন সন্দ্বীপ থানায়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার কামরুল হাসান সৌরভ সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডস্থ দৌলত খা পাড়ার সুলতান সেরাং এর বাড়ির মোসাদ্দেকুল মাওলার পুত্র।
এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শরিফুল আলম জানান, গত ২০ নভেম্বর মোবাইল ফোনে সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিকভাবে সন্দ্বীপ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সৌরভ’র মৃতদেহ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত-লাশ মর্গে প্রেরণ সহ সকল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং মৃত সৌরভ’র বড়ভাই মেহেদী হাসান’র মামলার ভিত্তিতে মামলার তদন্তভার মোঃ আব্দুল হালিম, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) এর উপর অর্পন করা হয় এবং এই তদন্তে বেরিয়ে আসে সৌরভ হত্যার বিভিন্ন ক্লু।
বেরিয়ে আসা ক্লু’র ভিত্তিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও সন্দ্বীপ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার তত্বাবধানে শেখ শরিফুল আলম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সন্দ্বীপ থানায় কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সর্বমোট ৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন, মোঃ রাব্বি হাসান, রুবেল আহমেদ শাহীন ওরফে আসাফুজ্জামান শাহীন ( সৌরভ’র জেঠাতো ভাই), ওমর ফারুক, জান্নাতুল ফেরদৌস, রহিমা বেগম, সালমা আক্তার ও ফারজানা আক্তার।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে মোঃ রাব্বি হাসান(২০) পিতা-মোঃ আক্কাছ, মাতা-নাজমা বেগম, সাং-মগধরা ১নং ওয়ার্ড, ফজলুল হক ডিলারের বাড়ী, থানা-সন্দ্বীপ, জেলা-চট্টগ্রামকে গত ২২ ডিসেম্বর ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামী ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি পেশ করে।
আসামী রাব্বি তার জবানবন্দিতে জানায় যে, জায়গা সম্পত্তি, পরকিয়া সম্পর্ক এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাব্বি সহ তাহার সহযোগী আরো ৫ জন একত্রিত হয়ে গত ১৯ নভেম্বর রাত অনুমান ১১ টার দিকে মোঃ কামরুল হাসান সৌরভ সন্দ্বীপ থানাধীন মগধরা ১নং ওয়ার্ডস্থ মোহাম্মদ আলী হাজীর বাড়ী জনৈকা রহিমা বেগম এর ঘর হতে বের হওয়া মাত্রই ধরে জোর পূর্বক আসামীদের সহযোগী একজনের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে সৌরভ’র অন্ডকোষ ও মূখ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামীগণ। মামলার রহস্য ঘোলাটে ও সন্দেহের তীর অন্য এলাকা তথা অন্য লোকদের দিকে ধাবিত করার লক্ষ্যে পরবর্তীতে গত ২০ নভেম্বর দিবাগত রাত ২ টা নাগাদ মৃত সৌরভ’র লাশ মোটরসাইকেল যোগে মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনাস্থল অর্থাৎ সন্দ্বীপ থানাধীন মগধরা ১নং ওয়ার্ড, জনৈক আক্তার হোসেন এর পুকুরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে কেঞ্জা গাছের নিচে হাত পা গলা বেঁধে উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে যায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, ধৃত আসামীগণ সহ তাদের সহযোগী পলাতক আসামীগণ জায়গা সম্পত্তি, পরকিয়া সম্পর্ক এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মোঃ কামরুল হাসান সৌরভ‘কে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













