মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামে স্কুল কলেজের দোহাই দিয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। বিশেষ করে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) শিরীষ তলায় স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ঘোরাঘুরি ছিল সবচেয়ে বেশি। স্কুল কলেজের দোহাই দিয়ে সিআরবি শিরীষ তলা যেন তরুণ-তরুণীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের করোনা রোধে ভেকসিন দেয়ার কার্যক্রমও চলছে। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আড্ডায় মশগুল স্কুল ও কলেজের নির্ধারিত পোশাকে থাকা কম্বাইন্ড শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় আনেকে আবার সিআরবি দফতরের সীমানা প্রাচীরের লোহার ফটক খুলেও ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছে বুধবার সকালে।
অভিযোগ উঠেছে, এসব শিক্ষার্থীরা নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হয়েছে সিআরবি’র শিরীষতলায়। ফলে সংক্রমিত হচ্ছে খুব সহজেই। কারণ বেশিরভাগই মাস্ক ছাড়া ঘুরছে যত্রতত্র।

এদিকে গত ১০ জানুয়ারি ওমিক্রণ সংক্রমণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে ১১টি শর্তের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সকলের জন্য। কিন্তু পর্যটকরা এসব বিধিনিষেধ না মেনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গত শুক্রবার বিকেলেও ছিল পর্যটকে ঠাসা। এদিকে বুধবার উচ্চ আদালতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক মাসের বন্ধ চেয়ে রিট আবেদন দাখিল করেছেন ঢাকার এক আইনজীবী।

অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি লেখালেখির মধ্যেই পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গা থানা এলাকা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটক আগমন রোধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। থানা পুলিশের টহল টিম এই স্পটে উপস্থিত থাকলেও কোন ধরনের কার্যকারিতা নেই। নগরীর পাহাড়তলীস্থ শেখ রাসেল স্মৃতি পার্কেও দেখা গেছে গত শুক্রবার বিকেলে দর্শনার্থীদের ঢল।
এদিকে পার্ক সংলগ্ন শাহজাহান মাঠে গত ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার কর্তৃক আয়োজিত মাসব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে। সেখানেও ওমিক্রন রোধে বিধিমালা মেনে চলার কোন বালাই নেই। মেলা ও পর্যটন স্পট বন্ধ না করা গেলে সংক্রমণের মাত্রা অর্শ্বের গতিতে দৌড়াবে।

আরও অভিযোগ, নগরীর অন্যতম ভোজন রসিকদের এলাকা হিসেবে খ্যাত স্টেডিয়াম ও নেভাল আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ফাস্ট ফুডের দোকান ও রেস্টুরেন্টগুলোতে তিল ধারনের ঠাই নেই। কোতোয়ালী থানা পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়ার নজির নেই শুক্রবারও। নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় রয়েছে স্বাধীনতা স্কয়ার। সেখানে ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে ভোজনরসিকদের জম্পেস আড্ডা চলছে।
নগরীর স্বাধীনতা পার্ক, ফয়’স লেক, অভয় মিত্র ঘাট, নতুনভাবে গর্জে উঠা বায়েজিদ লিঙ্ক রোড, ভাটিয়ারির সানসেট স্পটসহ নগরীর বিভিন্ন স্পটগুলোতে পর্যটকের কমতি নেই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কোন কার্যক্রমও নেই। কিন্তু প্রত্যক্ষভাবে পর্যটকদের পর্যটনকেন্দ্র বিমুখ করার কোন পদক্ষেপ নেই।

প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, সংক্রমণ মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে। কোভিডের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ সচেতনতা বৃদ্ধিসহ সকলকে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। শারীরিক, সামাজিক ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে কোভিডের সংক্রমণ রোধ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে।













