আজিজা রুপা >>
পরীমণি নামক নায়িকাটার কোনো সিনেমাই আমি দেখিনি। অনেকের কাছে শুনেছি সে নাকি খুবই সুন্দরী। কৌতুহলে তার ফটো দেখেছি। আমার কাছে তেমন একটা আকর্ষণীয় লাগেনি। বর্তমান টিভি অভিনেত্রী মেহেজাবিন, তানজিন তিসা, ফারিয়া ফারিন কিংবা অতীতের চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মৌসুমী, শাবনূর, পূর্ণিমা এদের ধারে কাছেও নেই।
মাস দু’এক আগে মুনিয়া হত্যা মামলার সংবাদ যখন ঘুরে বেড়াচ্ছিল ঠিক তখন পরীমণিকে নিয়ে একটা সংবাদ পড়েছিলাম। আমি তখনই অনুমান করেছি, মুনিয়ার মতই একদিন পরীমণির অবস্থা হবে।
সংবাদটিতে পরীমণিকে একটা প্রাইভেট হ্যালিকপ্টারের সীটে বসে থাকতে দেখা যায় বেশ রিল্যাক্স মুডে। সংবাদে বলা হয়েছিল, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির সাথে পরীমণি দুবাইতে সময় কাটাচ্ছেন। খবর পেয়ে জনৈক ব্যক্তির স্ত্রী সেখানে পাড়ি জমান।
আপনারা যারা আজ পরীমণির এই পরিস্থিতির জন্য সাপোর্ট দিচ্ছেন একজন অবলা নারী, অমুক তমুক বলে। আমি সাপোর্ট দিতে পারছি না বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। চলচ্ছিত্র একটা ইন্ডাস্ট্রি। এ থেকে দেশের অনেক আয় আসে। বহির্বিশ্বে পরিচয় থেকে অনেক পজেটিভ কিছু হয়। এখানে যারা কাজ করে তারা কখনও কখনও আমাদের দেশকে বহির্বিশ্বে রিপ্রেজেন্ট করে। বাংলদেশের এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক জুটি, অনেক খ্যাতিমান অভিনয় শিল্পী, অনেক সম্মানজনক জীবন কাটিয়েছেন, কাটাচ্ছেন। সেরকম আমরা দেখতে পাই মোসুমী-ওমর সানী, শাবনাজ-নাঈম, তৌকির-বিপাশা, জাহিদ হাসান-মৌ। এরা তো সফলতার শীর্ষে। এদের কেন কোনো স্ক্যান্ডাল নেই? এরাও তো মিডিয়ারই মানুষ। তাদের চেনে না এমন কেউ আছে?
আসলে সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তিগত। ব্যক্তিগত কারণে কেউ যদি মানুষকে সুযোগ দেয়, বিপথে পা বাড়ায়, ভুল পথে চলে সে তো খাদে পড়বেই। আমি চাইলে সব করতে পারবো, হোক সেটা অন্যায়-অনৈতিক। অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্পর্শ করা যেমন অন্যায়। ঠিক তেমনি আমি চাইলে অন্যায়-অনৈতিক যা ইচ্ছা তা করা, এটা আরও বড় অন্যায়। এসব ফালতু বিষয় সাপোর্ট করে উঠতি বয়সের মেয়েদের মাথা খাবেন না দয়া করে। সমাজ তাহলে কুলষিতায় ভরে যাবে।
অভিনয় করা অন্যায় নয়, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা অন্যায় নয়। নিজের সম্মান বজায় রেখে মেয়েরা সব করতে পারে। এর জন্য আমি মেয়েদের এক হাজারবার সাপোর্ট করি। জিন্স পরে টপস পরেও মেয়েরা হাঁটতে পারে। সে রাইট মেয়েদের আছে। তাতে কেউ কিছু বললে দু’চারটা কথা শুনিয়ে দেয়ার রাইটও মেয়েদের আছে। তবে ইজিগোয়িং এবং সবাইকে হ্যাঁ বলে যত পুরুষই একটু আগ্রহ দেখাবে সেসব পুরুষকে হ্যাঁ ভঙ্গিমা নাচিয়ে সব মেয়েদের সম্মান নষ্ট করার অধিকার কোনো মেয়ের নেই। তুমি ইজিগোয়িং হবে আর বিপদে পড়লে অসহায় হয়ে ডানা ঝাপটাবে, তা তো হবে না। স্বার্থের জন্য ইজিগোয়িং, তারপর কাহিনি! এসব নোংরা বিষয় নিয়ে কারো মাথা না ঘামানোই উচিত। এসব ব্যাপারগুলো সাপোর্ট করলে সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে- দেশ, সমাজ।
লেখক : কলাম লেখক
বাংলাধারা/এআই