২ নভেম্বর ২০২৫

হলি আর্টিজান নিয়ে বলিউডে সিনেমা নির্মাণ বন্ধের দাবি

বাংলাধারা ডেস্ক»

ভারতীয় চিত্রনির্মাতা হানসাল মেহতার ঘোষিত নতুন চলচ্চিত্র ‘ফারায’ কঠোর সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। এই ঘটনায় একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলায় ২২ নিরীহ মানুষ নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়।  

সিনেমাটির খবরে ওই হামলায় নিহতদের পরিবার কঠোর আপত্তি জানিয়ে এটি নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে। হামলায় নিহতদের আত্মত্যাগের প্রতি সিনেমাটি চরম অসম্মান প্রদর্শন করবে বলে তারা মনে করছেন। এছাড়া সিনেমাটি পরোক্ষভাবে বাংলাদেশকে একটি চরমপন্থী রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করবে বলেও মত প্রকাশ করেন তারা।

হলি আর্টিজানের ঘটনায় এক নিহতের পরিবারের সদস্য বলেন, ‘সেই ভয়াবহ রাতের ঘটনাটি কোনো অবস্থাতেই আমাদের দেশ, আমাদের জাতি ও আমাদের ধর্মকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারে না। বরং এরকম একটি ঘটনার সিনেমার মাধ্যমে পুনরাবৃত্তি মানুষের বিশ্বাসে বিরূপ ধারণার জন্ম দেবে যা সর্বোপরি আমাদের দেশের প্রতি অবিচার এবং দেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে। ’

সিনেমাটিতে প্রকাশিত টিজার ও নাম থেকে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়, এতে সেই রাতের ঘটনায় নিহত ফারাজকে কেন্দ্র করে নির্মিত– যিনি ঘটনার সময়ে তার দু’জন বন্ধু অবিন্তা কবির ও তারিশি জৈনের সঙ্গে ক্যাফেতে উপস্থিত ছিলেন। তারা তিনজনই নির্মমতার শিকার হয়ে ওই রাতে প্রাণ হারান।  

অবিন্তা কবির ও তারিশি জৈনের পরিবার সিনেমাটি নির্মাণ কাজ দ্রুত বন্ধে নির্মাতা হানসাল মেহতা ও সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।  

অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ জানান, “এরকম একটি ঘটনা যা জাতিকে রাতারাতি স্তব্ধ করে তুলেছিল – এটির চিত্রায়ন কখনো কোনো অবস্থাতেই সমীচীন নয়”। তিনি আরো জানান, চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রডাকশন হাউজটির হামলায় নিহতদের পরিবারের কাছ থেকে কোনো প্রকার বৈধ অনুমোদন গ্রহণ না করার মত অসংবেদনশীল আচরণ – তাকে চরমভাবে হতাশ করেছে।

“নিহত ফারায’কে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গেলে এটাই স্বাভাবিক যে আমার মেয়ে (অবিন্তা কবির), তুলিকার মেয়ে (তারিশি জৈন) এবং ঘটনায় অন্যান্য নিহত সকলেই দৃশ্যপটে চলে আসবে। এটা কি করে সম্ভব হয় – যেখানে আমাদের মধ্যে থেকে কারো কাছেই সম্মতি চাওয়া হয়নি? এটি বাস্তব ঘটনার ওপর নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছে, সুতরাং শুধুমাত্র একজনের চরিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বাকি ২১ জন নিহতদের করুণ বাস্তবতাকে তুচ্ছ করা নয়? যারা একই ঘটনার শিকার, এটা কেমন মানবতা?

অবিন্তা কবির ও তারিশি জৈন এর পরিবারবর্গ নির্মাতা মেহতা এবং অন্যান্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছে সেই রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার শিল্পকর্ম নির্মাণ না করার জন্যে তাদের আপত্তি পেশ করেছেন। নির্মাতাদের তারা অনুরোধ জানান, যাতে পরবর্তী সময়ে তারা এরকম কিছুর পুনরাবৃত্তি না ঘটান – যা তাদের এবং অন্যান্য নিহতদের পরিবারকে সেই ভয়াল রাতের স্মৃতিচারণ করতে বাধ্য করে।

সিনেমাটির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান, এটি ইসলাম ধর্মকে অপব্যাখা করে এবং হামলায় নিহতদের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি অসম্মানজনক বলেও মত প্রকাশ করেন তারা।

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ