২৯ অক্টোবর ২০২৫

হাটহাজারীতে অসময়ের কাটিমন আমের চমক

সুমন পল্লব, হাটহাজারী »

হাটহাজারী আম বাগানে যেন মধুমাসের আমেজ। গাছে গাছে ঝুলে থাকা থোকা থোকা পাকা আম দেখেই যেন মনে হবে মধুমাস। এপ্রিলের শুরুতেই এই দৃশ্য দেখা মিলেছে হাটহাজারীর আম বাগানে। অফসিজন কাটিমন আমের এমন সফলতার চিত্র মিলছে উপজেলা ফরহাদবাদ ইউনিয়নের উদালিয়া গ্রামে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এক ঝাঁক তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে সূচিত হয়েছে এমন সফলতার চিত্র। স্বল্প পরিসরে শুরু হলেও তাদের এমন সফলতা নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

মাঠ পর্যায়ে সরেজমিনে পুরো বাগান ঘুরে দেখা যায়, বুক সমান উচ্চতার আম গাছগুলোতে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে। কোন কোন গাছে আম ঝুলে মাটির সাথে প্রায় লেগেই গেছে। অর্থাৎ গাছে উঠে আম খাওয়ার যে প্রচলন তা এখন মাটিতে নেমে এসেছে। কেউ চাইলে মাটিতে শোয়া অবস্থাতেই হাত দিয়ে আম পেড়ে খেতে পারবে।

কৃষি উদ্যোক্তা মিজান ফারুকের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আল্ট্রা হাই-ডেনিসিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে গড়ে তোলা কাটিমনের বাগানে মোট ২০০টি গাছের মধ্যে ১২৭টি গাছে প্রথমবারের মত এ বছর ফলন পাওয়া গিয়েছে। বাগান থেকেই তিনি পাইকারি আম বিক্রি শুরু করেছেন। বাজারে আমের দাম বেশ চড়া থাকায় প্রথম বারের মত লক্ষাধিক টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উদালিয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার অরুপ কুমার বড়ুয়া জানান, উচ্চমূল্যের ফল হিসেবে অফসিজন আম হিসেবে প্রথমবারের মত কাটিমনের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। বাজারে দাম বেশি থাকায় কৃষক ও বেশ খুশি।

তিনি জানান, মিজান ফারুকের সাফল্য এলাকার শিক্ষিত তরুণদের মধ্যেও কৃষিতে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি করেছে।

হাটহাজারীতে অফসিজন কাটিমন আম চাষের ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আল মামুন শিকদার জানান, কাটিমন জাতের এই আম বাগান শুরু থেকেই উপজেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে ছিল। অফটাইম বেয়ারিং আনার জন্য শুরু থেকেই গাছের পুষ্টি ব্যবস্থাপনা, বালাই ব্যবস্থাপনা প্রভৃতির দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপদ আম উৎপাদনের লক্ষ্যে ফেরোমন ট্র্যাপ, স্টিকি ট্র্যাপ (হলুদ, সাদা, নীল), ভার্মি কম্পোস্ট প্রভৃতির ব্যবহারের প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, কাটিমন আম পিকসিজনে চাষাবাদের আম নয়, কেউ পিকসিজনে এই আমের ফলন নিতে চাইলে সেটা লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা কম। যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অফসিজনের ফসল হিসেবে কাটিমন আম চাষ লাভজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, কোন কৃষি উদ্যোক্তা কাটিমন আম চাষের ব্যাপারে আগ্রহী হলে তাকে উপজেলা কৃষি অফিস, হাটহাজারী হতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

আরও পড়ুন