বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের নদী হালদায় প্রজনন মৌসুমে আবারও ড্রেজারের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে একটি ডিমওয়ালা মা মাছের। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাউজানের আজিমের ঘাট এলাকায় ভেসে ওঠা মৃত ওই মৃগেল মা মাছটি উদ্ধার করা হয়।
মাছটি উদ্ধার করেন হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোসাঙ্গীর আলম এবং স্বেচ্ছাসেবী আনোয়ার ও বখতিয়ার। তাঁরা জানান, মৃত মাছটির ওজন প্রায় ৫ কেজি ১০০ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। মাছটির দেহে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং এর গোনাডে (ডিম্বাশয়ে) ছিল পূর্ণ পরিপক্ব ডিম।
রোসাঙ্গীর আলম বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, গত রাতে ড্রেজারের আঘাতে মাছটি মারা গেছে। এর আগে, ৪ মে একই এলাকার কাছে ড্রেজারের আঘাতে আরও একটি ডিমওয়ালা কাতলা মা মাছ মারা যায়, যার ডিম পচে গিয়েছিল।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে হালদা নদীতে মা মাছের প্রজননের উপযোগী পরিবেশ বিরাজ করছে। ডিম ছাড়ার সময় হওয়ায় নদীতে মা মাছের আনাগোনা বেড়েছে। প্রায় ৪০০ ডিম সংগ্রহকারী প্রস্তুত অবস্থায় নৌকা, জাল ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন। পাহাড়ি ঢল নামলেই ডিম ছাড়বে মা মাছ। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ড্রেজারের আঘাতে মা মাছের মৃত্যু ঘটছে, যা হালদার পরিবেশের জন্য অশনিসংকেত।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “গত ১৫ দিনে দু’টি মৃত মা মাছ আমরা উদ্ধার করেছি। এর বাইরেও হয়তো আরও মা মাছ মারা গেছে, যেগুলো পঁচে গেছে বা কেউ তুলে নিয়ে খেয়েছে।”
রাউজান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, মৃত মৃগেল মা মাছটি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে হালদা নদীর পাড়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। মাছটির শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা ড্রেজারের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রমাণ দেয়।
হালদা নদীর পরিবেশ এবং মা মাছ সংরক্ষণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এআরই/বাংলাধারা